সুস্থ জাতি গঠনে কিশোর-কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা বাড়াতে হবে

বাংলাদেশ চিত্র ডেস্ক

সুস্থ জাতি গঠনে কিশোর-কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা। তারা বলেছেন, এই ধরনের স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে কার্যক্রম এখনো কম। সরকারি বিনিয়োগের চেয়ে সফলতার হার আশাবাদী নয়।

আজ রবিবার রাজধানীর বাংলামোটরস্থ বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে ‘সমন্বিত উদ্যোগে কিশোর কিশোরীদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার (এসআরএইচআর) উন্নয়ন: চ্যালেঞ্জ, অর্জন ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক  সেমিনারে তথ্য তুলে ধরা হয়।

সেমিনারে আলোচক হিসেবে ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের (ডিজিএফপি) প্রোগ্রাম ম্যানেজার (এঅ্যান্ড আরএইচ) ড. মো. মনজুর হোসেন, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক জাহান-ই-গুলশান, ডিজিএফপির এডোলিসেন্ট ও স্কুল হেলথের এক্স-পিএম ডা. সামশুল হক। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অনুষ্ঠানের সভাপতি আরএইচস্টেপ, অপরাজেয় তারুণ্য’র প্রজেক্ট ম্যানেজার মোহাম্মদ আবু রায়হান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন হুজাইফা সাকোয়ান জেলিড।

মূল প্রবন্ধে বলা হয়, চলতি বছরের মার্চ থেকে আরএইচস্টেপ ঢাকাসহ ১০টি জেলায় ইয়ুথ লিডার রির্সোস সেন্টার প্রতিষ্ঠা করে তরুণদের সম্ভাবনা বিকাশের লক্ষ্যে ‘আনলকিং ইয়ুথ পটেনশিয়াল’ (ইউওয়াইপি): অপরাজেয় তারুণ্য’ শীর্ষক কার্যক্রম শুরু করে। এতে বলা হয়, কিশোর-কিশোরী বিশেষ করে প্রতিবন্ধি ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠির তরুণরা অনেক সময় প্রজনন স্বাস্থ অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়, যা তাদের স্বাস্থঝুঁকি বাড়ায়। তাই সবার জন্য তথ্যপ্রাপ্তি ও স্বাস্থসেবা নিশ্চিত করতে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনে এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

আবু রায়হান বলেন, তরুণদের নিজ অধিকার সম্পর্কে সচেতন করতে সারা দেশে ২২৩টি প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়। এতে ৮ হাজার ৮৫৯ জন অংশ নেন। এদের মধ্যে কিশোর কিশোরী (১৯ বছর পর্যন্ত) ৪ হাজার ৪৪৯ জন, যা মোট অংশগ্রহণের ৫০ শতাংশ, মেয়ে ছিল ২ হাজার ৮৮১, ছেলে ছিল ১ হাজার ৫৬৮ জন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য অ্যাডভোকেসি ক্যাম্পেইন ২ হাজার ৩৮০ ও সাংস্কৃতিক মনন বিকাশে আয়োজন করা থিয়েটার অনুষ্ঠানে অংশ নেন ১ হাজার ৫০৯।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০২২ সালের আদমশুমারি তথ্য উল্লেখ করে মূল প্রবন্ধে বলা হয়, দেশের মোট জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ অর্থাৎ ৪ কোটি ৫৯ লাখ মানুষ তরুণ। ২০৫০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা কমে ১০-১৯ শতাংশে নেমে আসবে বলে জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল পূর্বাভাস দিয়েছে। তাই এখনই যুব জনগোষ্ঠীতে বিনিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

অনুষ্ঠানে ডা. মো. মনজুর হোসেন বলেন, দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই হেলথ ক্যাম্প আয়োজনের মাধ্যমে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য, পুষ্টি, বাল্যবিবাহ, স্বাস্থ্যবিধি এবং মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন করা, কিশোর-কিশোরী স্বাস্থ্য ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপ সম্পর্কে কিশোর-কিশোরীদের অবগত করা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কম দামে অর্থাৎ ১০ টাকা দামে সেনিটারি প্যাড সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় হাজার হাজার নারী জরায়ু মুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। যার মধ্যে প্রায় ৫ হাজার নারী মৃত্যুবরণ করেন। সময়মতো টিকা দেওয়ার মাধ্যমে এই মৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব। 

 

Share This Article