
কক্সবাজার ঘুরতে যাচ্ছিলেন পরিবারের সবাই মিলে। হাসিখুশি মুখে শুরু হয়েছিল আনন্দযাত্রা, কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই থেমে গেল সেই যাত্রা—চিরতরে। কক্সবাজারের চকরিয়ায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের পাঁচজনের প্রাণহানিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে।
সোমবার (৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার–চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা হাঁসের দিঘী ঢালায় যাত্রীবাহী মারছা বাস ও পর্যটকবাহী মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের ব্যবসায়ী এনামুল হক পাটোয়ারীর স্ত্রী রুবি বেগম (৩৫), তাঁর মা ও শ্বাশুড়ি, বোন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ ১৫তম ব্যাচের ছাত্রী সাদিয়া হক (২৪) এবং শ্যালিকা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রী ফারজানা লিজা (২২)।
গুরুতর আহত হয়েছেন এনামুল হক পাটোয়ারী (৪৫), তাঁর ছোট কন্যা ও এক শ্যালক। তাঁদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহত এনামুল হক পাটোয়ারী চৌদ্দগ্রাম সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর পাটোয়ারীর ছোট ভাই বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, কুমিল্লা থেকে কক্সবাজারগামী মাইক্রোবাসটি (ঢাকা মেট্রো চ–১৫–৭৩৪৩) চকরিয়ার হাঁসের দিঘী ঢালায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা মারসা পরিবহনের দ্রুতগতির বাসটির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। মুহূর্তেই মাইক্রোবাসটি দুমড়ে–মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান একই পরিবারের পাঁচজনই।
খবর পেয়ে চকরিয়া থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার অভিযান চালায়। চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, “নিহতদের মরদেহ মালুমঘাট খ্রিস্টান হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত করা হচ্ছে।”
দুর্ঘটনার পর এলাকায় নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। একসঙ্গে পাঁচজন প্রিয়জনকে হারিয়ে শোকে মুহ্যমান তাঁদের স্বজনরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অসংখ্য মানুষ প্রকাশ করছেন শোক ও সমবেদনা।
জীবন নিয়ে তারা যাচ্ছিলেন আনন্দযাত্রায়—কিন্তু ফিরলেন লাশ হয়ে। এক পরিবারের পাঁচ প্রাণের এ নিভে যাওয়া পুরো দেশকে নাড়া দিয়েছে।