
গবি প্রতিনিধি:
অনিশ্চিত বিজ্ঞানে গরিবের পক্ষে থাকতে হবে। ওষুধ নীতিতে সমতা ও ন্যায্যতা প্রয়োজন। পরাজয় শেষ নয়, নতুন করে শুরু করার সময় এসেছে। ৪২ বছর পর সাধারণ মানুষের জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেন বিএসএমএমইউ’র ফার্মাকোলজী বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ডাঃ মোঃ সায়েদুর রহমান।
শনিবার (৬ জুলাই) সকাল ১০ ঘটিকায় সাভারের গণসাস্থ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পিএইচ অডিটোরিয়ামে উবিনীগ’র নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আকতারের সঞ্চালনায় আয়োজিত “জাতীয় ওষুধনীতি ১৯৮২ প্রণয়নের ৪২ বছরঃ অর্জন ও ভবিষ্যৎ” শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন,”জাফরুল্লাহ স্যারের নেতৃত্বে ওষুধ বিশেষজ্ঞ কমিটি জনস্বার্থে কাজ শুরু করে। বহুজাতিক কোম্পানির গোপন তথ্য ব্যবহার করে নতুন নীতিমালা তৈরি হয়। ক্ষতিকর ওষুধ নিষিদ্ধ করা হয়, যা দেশীয় ওষুধ শিল্পকে এগিয়ে নেয়। কার্যকর ওষুধের নীতি বহুজাতিক কোম্পানির ব্যবসা কমায়। ৮২-এর ওষুধ নীতির বাস্তবায়ন যাচাই করা দরকার।”
এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগের সাবেক অধিকর্তা এবং বায়োমেডিকেল রিসার্চ সেন্টারের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বলেছেন, “নতুন প্রজন্মকে স্বাস্থ্য ও ঔষধের ইতিহাস জানাতে হবে। ১৯৭৩ সালে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে অযথা সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। পাকিস্তান আমলে দেশীয় ঔষধ শিল্পের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়।”
তিনি আরও বলেন, “১৯৭৫ সালের পর ঔষধ ক্ষেত্রে সমাজতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তিত হয়। বিদেশী কোম্পানিগুলো কাঁচামাল উৎপাদনের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি। স্বদেশী আন্দোলনের মাধ্যমে ঔষধ শিল্পের বিকাশ ঘটে। বর্তমানে দেশে ৯৮% ঔষধ উৎপাদন হয়। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকলেও ঔষধনীতি নিয়ে পর্যাপ্ত আলোচনা হয় না। এ বিষয়ে সকলের সচেতনতা প্রয়োজন।”
বিআইডিএস’র গবেষণা পরিচালক ড. কাজী ইকবাল বলেন, “ওষুধ নীতির মূল লক্ষ্য হলো সহজলভ্য ও কার্যকর ওষুধ নিশ্চিত করা যা জনকল্যাণে তৈরি হবে। দেশীয় উৎপাদন ও স্থানীয় কোম্পানি উৎসাহিত করা গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৮২-এর আগে আমদানি নির্ভরতা ও উচ্চ মূল্যের কারণে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বেশি লাভ করা হতো। নীতিমালা প্রয়োগের পর এই প্রবণতা কমে আসে। তবে স্থানীয় কোম্পানিগুলোকে পূর্ণ সমর্থন দেওয়া এখনও চ্যালেঞ্জিং।”
এ সময় সেমিনারের শেষ সময়ে বিভিন্ন মতামত প্রকাশ করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডাঃ শিরিন হক, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ডাঃ লায়লা পারভিন বানু, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ডায়ালাইসিস সেন্টারের সাবেক উপ পরিচালক ডাঃ লিয়াকত আলী এবং ডা: হাবিবুল্লাহ তালুকদার।
এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিআইডিএস এর গবেষনা পরিচালক ডাঃ কাজী ইকবাল, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডাঃ আবুল কাশেম চৌধুরী, সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান, ডাঃ মনজুর কাদির আহমেদ, ডাঃ কণা চৌধুরী, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আবুল হোসেন, ট্রেজারার অধ্যাপক মোঃ সিরাজুল ইসলাম, রেজিস্ট্রার এস তাসাদ্দেক আহমেদ।
আরো উপস্থিতি ছিলেন, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডাঃ আবুল বাশার, ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডাঃ বিশ্বজিৎ, ওয়াটার এইডের রিজিওনাল পরিচালক ডাঃ মোঃ খায়রুল ইসলাম সহ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।