‘বৃহত্তর সুন্নি জোট’ নামে ৩ দলের নতুন রাজনৈতিক জোটের আত্মপ্রকাশ

বাংলাদেশ চিত্র ডেস্ক

'বৃহত্তর সুন্নি জোট' নামে ৩ দলের নতুন রাজনৈতিক জোটের আত্মপ্রকাশ
‘বৃহত্তর সুন্নি জোট’ নামে ৩ দলের নতুন রাজনৈতিক জোটের আত্মপ্রকাশ

বাংলাদেশের তিনটি নিবন্ধিত সুন্নি মতাদর্শী রাজনৈতিক দল নিয়ে ‘বৃহত্তর সুন্নি জোট’ আত্মপ্রকাশ করেছে। দলগুলো হলো: বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি)। শনিবার  জাতীয় প্রেসক্লাব অডিটোরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে এই জোট গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়।

জোটের পক্ষ থেকে বলা হয়, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর গত ২৪ জুলাইয়ের মতো এত রক্তক্ষয়ী ঘটনা আর ঘটেনি। এ সময় জুলাই আন্দোলনের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার, নিহতদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন, এবং আহতদের উন্নত চিকিৎসার দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ৫ আগস্টের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। এই সময়ে সন্ত্রাস, খুন, গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে আরও জানানো হয়, বিগত এক বছরে শতাধিক মসজিদ, মাদরাসা ও মাজারসহ বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় সরকারের নির্লিপ্ত ভূমিকা জনমনে ক্ষোভ বাড়াচ্ছে। জোটের নেতারা মনে করেন, দেশের রাজনীতিতে প্রতিহিংসার সংস্কৃতি জেঁকে বসেছে এবং নির্বাচন নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা কাটেনি।

লিখিত বক্তব্যে পিআর পদ্ধতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় এবং বলা হয়, এটি একটি নতুন ধারণা, যা জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া, জাতীয় নীতি নির্ধারণে নিবন্ধিত সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা, জুলাই আন্দোলনে লুট হওয়া অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, অর্থ পাচার রোধ, এবং দুর্নীতিবাজ ও ঋণখেলাপিদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার দাবি জানানো হয়।

‘বৃহত্তর সুন্নি জোট’-এর ঘোষিত ১৭ দফা দাবি এবং ২১ দফা ঘোষণাপত্রের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় হলো: धार्मिक ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে একটি কল্যাণমুখী ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সমাজ প্রতিষ্ঠা; শান্তিপূর্ণ ও অহিংস রাজনৈতিক সংস্কৃতি চর্চা; দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া; সুদমুক্ত, ন্যায্য ও উৎপাদনভিত্তিক অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা; কৃষি, শিল্প ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা খাতকে সহায়তা দিয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি; মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং সিন্ডিকেট ও কালোবাজারি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া; এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থানের নতুন বাজার তৈরি করে প্রবাসীদের স্বার্থ রক্ষা করা।

জোটের নেতারা আরও জানান, কুরআন-সুন্নাহর আলোকে একটি যুগোপযোগী জাতীয় শিক্ষা নীতি প্রণয়ন, মাদরাসা, সাধারণ ও কারিগরি শিক্ষার মধ্যে সমন্বয় সাধন, এবং যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করাও তাদের লক্ষ্য। একই সঙ্গে, নারী ও শিশু অধিকার সুরক্ষা, এবং মাদক, জুয়া ও অনৈতিক সংস্কৃতি নির্মূল করার দাবিও তারা জানিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শায়খুল হাদিস অধ্যক্ষ আল্লামা জয়নুল আবেদীন জুবাইর। ঘোষণাপত্র পাঠ করেন অধ্যক্ষ আল্লামা স উ ম আব্দুস সামাদ। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন আল্লামা এম এ মতিন, পীরে তরিকত আল্লামা ছৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী, এবং পীরে তরিকত আল্লামা ছৈয়দ সাইফুদ্দীন আল হাসানী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মোহাম্মদ আসলাম হোসাইন।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ আল্লামা এস এম ফরিদ উদ্দীন, আল্লামা আবু সুফিয়ান আবেদী আলকাদেরী, অ্যাডভোকেট আবু নাছের তালুকদারসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব।



ভালো সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ ফিডটি অনুসরণ করুন


Google News

Share This Article