
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাউসা ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের সুপারিনটেনডেন্ট এবং বিএনপি নেতা মো. রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে জাল সনদ ব্যবহার করে এমপিওভুক্ত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তিনি ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং (সিভিল) বিষয়ে জাল সনদ দেখিয়ে প্রথমে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান এবং পরে প্রভাব খাটিয়ে সুপারিনটেনডেন্ট পদ বাগিয়ে নেন। তিনি বর্তমানে বাউসা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতিরও দায়িত্ব পালন করছেন।
কারিগরি অধিদপ্তরের এমপিও শাখায় খোঁজ নিয়ে পাওয়া তথ্য মতে, এমপিও করার ক্ষেত্রে জমাদানকৃত রেজাউল করিমের ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং (সিভিল) বিষয়ে জাল সনদের বিষয়টি প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে অধিদপ্তর থেকে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতিকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল। এজন্য জুন মাসেও তার বেতন ‘স্টপ পেমেন্ট’ অবস্থায় রয়েছে। ওই শাখার এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী অভিযোগ প্রমাণের পর রেজাউল করিমকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য শুনানিতে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু হয়তো তিনি যথাযথ প্রমাণ উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হন। তাই তার বেতন স্থগিত অবস্থায় রয়েছে।’
‘নিয়ম অনুযায়ী অভিযোগ প্রমাণের পর রেজাউল করিমকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য শুনানিতে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু হয়তো তিনি যথাযথ প্রমাণ উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হন। তাই তার বেতন স্থগিত অবস্থায় রয়েছে।’- কারিগরি অধিদপ্তর
জানা যায়, ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতিকে পাঠানো এ সংক্রান্ত একটি চিঠিতে রেজাউল করিমের জাল সনদের বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। চিঠিতে বলা হয়, মোঃ রেজাউল করিম এর বিরুদ্ধে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং (সিভিল) সনদটি ভাল করে সুপারিনটেনডেন্ট পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে এমপিওভুক্তির বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া যায়। প্রাপ্ত অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য কারিগরি চেয়ারম্যানের কাছে সঠিকতা যাচাইয়ের জন্য একটি পত্র প্রেরণ করা হয়। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে রেজাউল করিমের (সুপারিনটেনডেন্ট) ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং (সিডিল) সনদটি বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড হতে ইস্যু করা হয়নি বলে জানানো হয়। সেক্ষেত্রে তার ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং (সিভিল) সনদটি জাল প্রতীয়মান হয়।
রেজাউল করিম জাল সনদ দিয়ে এমপিওভুক্ত হয়ে জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ (২৩ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত সংশোধিত) এর অনুচ্ছেদ ২৯.১.৫ ভঙ্গ করেছেন রেজাউল করিম বলে জানানো হয়। সেই সঙ্গে জাল সনদ দিয়ে এমপিওভুক্ত হয়ে জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ (২৩ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত সংশোধিত) এর অনুচ্ছেদ ২৯.১.৫ ভঙ্গ করায়, কেন তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তার যথাযথ ব্যাখ্যা (সুস্পষ্ট প্রমাণকসহ) ১০ কর্মদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তর বরাবর পাঠাতে বলা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘আমি একটি প্রোগ্রামে আছি। পরে কথা বলব।’ পরে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি আর রিসিভ করেননি। যদিও এর আগে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের সঙ্গে আলাপাকলে বেতন স্থগিত ও জাল সনদের বিষয়ে প্রশ্ন করলে এড়িয়ে যান তিনি।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পিআইইউ) প্রকৌ. মোঃ মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি। দুই-একদিন পর জানাতে পারব।’