‘গণঅভ্যুত্থানে আহতদের নিয়ে চলচ্চিত্র-টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে শিগগিরই সমন্বিত প্রশিক্ষণ কোর্স’

বাংলাদেশ চিত্র ডেস্ক

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে শিল্প, সংস্কৃতি ও চলচ্চিত্র বিষয়ে আগ্রহীদের নিয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে (বিসিটিআই) সমন্বিত প্রশিক্ষণ কোর্স শিগগিরই শুরু করা হবে। এই কোর্স চালুর বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণের জন্য তিনি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট আয়োজিত চারটি স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের প্রশিক্ষণার্থীদের কোর্স প্রোডাকশনের চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, সনদপত্র বিতরণ ও তারুণ্যের উৎসবের আওতায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের সম্মানজনক পুনর্বাসনের ওপর গুরুত্বারোপ করে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, যারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত হয়েছেন, তাদের পছন্দ অনুযায়ী শিল্প, সংস্কৃতি ও গণমাধ্যম জগতে আসা প্রয়োজন। এতে দেশ ও জাতি উপকৃত হবে। 

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের বিষয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের উদ্যোগে গণঅভ্যুত্থানে আহতদের সাংবাদিকতা বিষয়ে বেশ কয়েকটি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটেও স্বল্প সময়ের মধ্যে এই প্রশিক্ষণ শুরু হবে। 

প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান প্রায়োগিক ক্ষেত্রে কাজে না লাগলে সেই প্রশিক্ষণের মূল্য নেই। বাংলাদেশে চলচ্চিত্র নির্মাণে কারিগরি ক্ষেত্রে দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে। সাউন্ড, কালার, এডিটিংসহ কারিগরি ক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়াতে তিনি প্রশিক্ষণার্থীদের পরামর্শ দেন। 

মাহফুজ আলম বলেন, চলচ্চিত্রের মার্কেট নিয়ে হতাশ হওয়া যাবে না। বাংলাদেশ ও ভারত মিলে এখনও কমপক্ষে ৩০ কোটি বাংলাভাষী মানুষ রয়েছে। এই বিশাল জনগোষ্ঠী চলচ্চিত্রের জন্য বড়ো মার্কেট। 

মানুষের চাহিদা বিবেচনা করে ভালো মানের কনটেন্ট নির্মাণের জন্য প্রশিক্ষণার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান উপদেষ্টা। 

বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভাষা-সংস্কৃতিভিত্তিক কনটেন্ট নির্মাণের ওপর গুরুত্বারোপ করে উপদেষ্টা বলেন, আঞ্চলিক ভাষা-সংস্কৃতিভিত্তিক কনটেন্টের প্রতি দেশের মানুষের ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। এ ধরনের কনটেন্ট নির্মাণে বৈচিত্র্য নিয়ে আসতে হবে এবং তরুণ প্রজন্মের জন্য উপযোগী করতে হবে। 

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, শিল্প, সংস্কৃতি ও চলচ্চিত্র-বিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাজনীতির বাইরে রাখতে হবে। তিনি এসব প্রতিষ্ঠান নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মুহম্মদ হিরুজ্জামান ও বিসিটিআইয়ের গভর্নিং বডির সদস্য রফিকুল আনোয়ার রাসেল। স্বাগত বক্তব্য দেন বিসিটিআইয়ের প্রধান নির্বাহী আবুল কালাম মোহাম্মদ শামসুদ্দিন।

অনুষ্ঠানের শেষে বিসিটিআই পরিচালিত চারটি স্বল্পমেয়াদি কোর্সের (বেসিক ফিল্ম কোর্স, দ্বিতীয় ফিল্ম অ্যাপ্রিসিয়েশন কোর্স, তৃতীয় চলচ্চিত্র সম্পাদনা প্রশিক্ষণ পাঠ্যধারা এবং অষ্টম চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অভিনয় প্রশিক্ষণ কোর্স) মোট ৬০ জন প্রশিক্ষণার্থীকে সনদপত্র দেওয়া হয়।

Share This Article