
কুমিল্লা নামে বিভাগ বাস্তবায়নের দাবিতে নগরীর পূবালী চত্বরে আয়োজিত মহাসমাবেশ পরিণত হয় জনসমুদ্রে। শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেল ৩টা থেকে শুরু হওয়া এই ঐতিহাসিক সমাবেশে পূবালী চত্বর ছাড়িয়ে লিবার্টি চত্বর, রানীরবাজার, পুলিশ লাইন, রাজগঞ্জ ও টমছম ব্রিজ সড়ক পর্যন্ত ভরে যায় মানুষের ঢলে।
দলমত নির্বিশেষে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এ সমাবেশে অংশ নেন। সবার হাতে ছিল “কুমিল্লা নামে বিভাগ চাই” লেখা ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড ও জাতীয় পতাকা। “কুমিল্লার নামেই বিভাগ চাই” ও “তুমি কে, আমি কে—কুমিল্লা কুমিল্লা” স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো সমাবেশস্থল।
এই দাবিকে ঐতিহাসিক রূপ দিতে কুমিল্লা দোকান মালিক ফেডারেশনের উদ্যোগে নগরীর সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মার্কেট ও শপিংমল প্রায় দুই ঘণ্টার জন্য বন্ধ রাখা হয়। ব্যবসায়ী থেকে শ্রমিক—সবাই দলমত নির্বিশেষে সমাবেশে যোগ দিয়ে কুমিল্লা বিভাগের দাবিতে ঐক্য প্রকাশ করেন। নারী-পুরুষ, শিশু ও বৃদ্ধসহ সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে পূবালী চত্বর রূপ নেয় জনসমুদ্রে। উপস্থিত ছিলেন প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার মানুষ।
সমাবেশে অংশ নেন বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কল্যাণ সমিতি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুর সমিতিসহ কুমিল্লার বিভিন্ন ব্যবসায়ী, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা বলেন, কুমিল্লা নামে বিভাগ বাস্তবায়ন কুমিল্লাবাসীর প্রাণের দাবি। এই দাবির পক্ষে জনসমর্থনের ঢল ইতিহাসে নতুন অধ্যায় সৃষ্টি করেছে। বিভাগ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা আরও দৃঢ় হবে এবং প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।
মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াছিন। এ সময় বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা মহানগর জামায়াতের আমীর কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, কুমিল্লা দোকান মালিক ফেডারেশনের সভাপতি সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, সাধারণ সম্পাদক জামাল আহমেদ, কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সভাপতি উদবাতুল বারী আবু, সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু, দক্ষিণ জেলা বিএনপি নেতা আমিরুজ্জামান আমির, কুমিল্লা প্রেসক্লাব সভাপতি কাজী এনামুল হক ফারুক, দৈনিক কুমিল্লার কাগজ সম্পাদক আবুল কাশেম হৃদয়, কুমিল্লা মহানগর হেফাজতে ইসলামের সেক্রেটারি মাওলানা মুন্নীরুল ইসলাম কাসেমী এবং বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মুজিবুর রহমান ভূঁইয়া।
বক্তারা একবাক্যে বলেন, “কুমিল্লা নামে বিভাগ বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি।” এই দাবির প্রতি সরকার দ্রুত সাড়া দেবে—এমন প্রত্যাশা করেন তারা।