আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) তিনটি দলকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এক ব্রিফিংয়ে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ এই তথ্য জানান।
আখতার আহমেদ বলেন, ‘চূড়ান্ত পর্যালোচনা শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এখন দাবি-আপত্তি চেয়ে আগামীকাল পত্রিকায় গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। এরপর দাবি-আপত্তি আসলে তা নিষ্পত্তি করে চূড়ান্ত নিবন্ধন দেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ১৪৩টি আবেদন পেয়েছিলাম। এর মধ্যে প্রাথমিক বাছাইয়ের পর ২২টি দলের ব্যাপারে মাঠ পর্যায়ে তদন্তের জন্য পাঠিয়েছিলাম। তদন্ত থেকে যে তথ্য পাওয়া গেছে, সে তথ্যের ধারাবাহিকতায় আমরা সাতটা রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের কথা বলেছি যে, না তারা কোয়ালিফাই করে না। একটা রাজনৈতিক দলের বিষয়ে… বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি তাদের ব্যাপারে হাইকোর্টে দায়ের করা একটা অবেদনের রায় পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আর বাকি যেগুলো আছে, সাতটা দলের ক্ষেত্রে আমরা বলেছি যে, না তারা কোয়ালিফাই করেন না, মিনিমাম রিকোয়ারমেন্ট ফুলফিল করেন না। এর ধারাবাহিকতা পুনঃতদন্ত করে কমিশন যে সিদ্ধান্তে এসেছে, সেটা আমি বলছি যে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতায় এবং অংশগ্রহণে অতীত নির্বাচন সংক্রান্ত ধারাবাহিকতায় তিনটা দল প্রাথমিকভাবে বিবেচিত হয়েছিল জাতীয় জনতা পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (শাহ জাহান সিরাজ) এবং বাংলাদেশ জাতীয় লীগ।’
তিনি বলেন, ‘কিন্তু পরবর্তী অধিকতর যাচাই বাছাইয়ে লক্ষ্য করা গেছে যে, তাদের কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা নাই। সেজন্য তিনটাকেও বাতিল করা হচ্ছে। আর যে দলগুলো ছিল তার মধ্যে থেকে আম জনতার দল, বাংলাদেশ জাস্টিস এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, ভাষানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, জনতার দল, মৌলিক বাংলা, জনতার পার্টি, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি এই আটটা দলের সঠিকতা না পাওয়ার জন্য নামঞ্জুর করা হয়েছে।’
আখতার আহমেদ বলেন, ‘আমরা তিনটা দলের সঠিকতা পেয়েছি এবং সে তিনটা দল হচ্ছে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এই তিনটা দলের ব্যাপারে নতুন প্রার্থিত নিবন্ধনের বিষয়ে কমিশন মনে করেছে যে এই তিনটা দল রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে পারে। তাদের ব্যাপারে আগামীকাল পত্রিকায় আমরা বিজ্ঞপ্তি দিব অভিমতের জন্য। এবং ১২ তারিখের ভিতরে আমরা এই অভিমতের সময়সীমা নির্ধারণ করে দিচ্ছি। এই নির্ধারিত সময় সময়ের মধ্যে যে তথ্য পাওয়া যাবে সেটা পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
এই তিনটা দল কি তাদের দলীয় কার্যালয় হিসাব করে পেয়েছে কি-না এবং দুই ধাপে তাদের কতগুলো কার্যালয় অস্তিত্ব পেয়েছেন জানতে চাইলে ইসি সচিব সরাসরি কোনও উত্তর দেননি।
তিনি বলেন, ‘আপনাদের কাছে মৌলিক যে প্রশ্নটা যে ছিল যে, কয়টা দল রাজনৈতিক হবে এবং ক্রাইটেরিয়া যেগুলো ছিল সেগুলো নিয়ে এই তিনটা দল কোয়ালিফাই করেছে। প্রাথমিকভাবে যেটা বলা হয়েছিল যে ১০০টা উপজেলা লেভেলে এবং ২২টা জেলা লেভেলে তো আইদার অফ টু সটিসফাইড না করলে দেওয়া হচ্ছে না। এখানে আবার একটা আপনার কোর্টেরও সিদ্ধান্ত আছে কিছুটা লিনিয়েন্টলি দেখার ব্যবস্থা বলা হচ্ছে। সেই বিবেচনায় আইদার অফ ট্রেকে কোয়ালিফাই করেছেন নূনতম সামান্য যদি কিছু শর্টফ্রম থেকে থাকে উপজেলা লেভেলে বা জেলা লেভেলে তাহলে সেটাকে বিবেচনায় নিয়েই সহনশীলভাবে নেয়ার কথা বলা হয়েছে। কতগুলা সংখ্যাগত যদি কয়টা কয়টা এটা বলেন আমি এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। পরে বলতে পারবো।’
জাতীয় লীগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এর ধারাবাহিকতা পাওয়া যায়নি।’
তিনটা দলের প্রতীকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যেটা আমার জানা আছে যে, এনসিপি চেয়েছিল “শাপলা কলি”, আরেকটা দল চেয়েছে ‘কাচি’ আর আরেকটা দল তাদের প্রতীক পরিবর্তনের জন্য অনুরোধ করেছে। সেজন্য এখন প্রতীকটা বলিনি। আরেকটা দল যেহ্বতু চেয়েছে সেটা আমি দেখিনি। সেটা যদি প্রাপ্যতা থেকে তাহলে সেটাসহ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।’
সব মিলিয়ে চূড়ান্ত গেজেট কবে প্রকাশ হবে জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, ‘এটা ১২ তারিখ পর্যন্ত সময়সীমার ভিতরে আমরা দাবি জিনিস বা অভিমত পাব। ১২ তারিখের পরে দুই একটা দিন তো লাগবে। যদি কোনও সমস্যা না থাকে তাহলে ১৪ থেকে ১৫ তারিখের ভিতরে হয়ে যাবে।’