১১ কূপ থেকে দিনে ১৪৩ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের আশা পেট্রোবাংলার

বাংলাদেশ চিত্র ডেস্ক

জ্বালানি সংকট কাটাতে দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ১১টি কূপ খনন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এই কার্যক্রম সফল হলে দৈনিক প্রায় ১৪৩ মিলিয়ন ঘনফুট নতুন গ্যাস পাওয়া যাবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ কর্পোরেশন (পেট্রোবাংলা)।

প্রতিষ্ঠানটির উপ-মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তারিকুল ইসলাম খান জানান, দেশের বর্তমান জ্বালানি সংকট নিরসনে দেশীয় উৎস হতে গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধি করে জ্বালানির চাহিদা ও সরবরাহের মাঝে স্থিতিশীল ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য পেট্রোবাংলা বদ্ধপরিকর। এলক্ষ্যে ২০২৬ সালের মধ্যে ৫০টি ও ২০২৮ সালের মধ্যে ১০০টি কূপ খনন ও ওয়ার্কওভার কর্মপরিকল্পনাসহ দেশের বিভিন্ন ব্লকে অনুসন্ধান ও নতুন কূপ খনন কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স) জামালপুর-১ অনুসন্ধান কূপ খনন করেছে। যার মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মত ব্লক-৮ এ বাণিজ্যিক গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, এই উদ্যোগের ফলে দেশের নিজস্ব গ্যাস ক্ষেত্রসমূহ হতে উৎপাদিত প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে, যা দেশের বিদ্যমান গ্যাস সংকট হ্রাস করে দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

পেট্রোবাংলা সূত্র মতে, জামালপুর স্ট্রাকচারে গ্যাসের রিজার্ভের পরিমাণ ও বিস্তৃতি মূল্যায়নের লক্ষ্যে আরও ২টি (১টি উন্নয়ন ও ১টি অনুসন্ধান) কূপ খনন করতেদ ডিপিপি প্রণয়নের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ ছাড়া সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের (এসজিএফএল) অধীন হরিপুর গ্যাস ফিল্ডে সিলেট-১০ কূপ খননের সময় সেখানে জ্বালানি তেলের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। হরিপুর স্ট্রাকচারে মজুদকৃত জ্বালানি তেলের বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলন নিশ্চিত করতে সিলেট-১২ তেল কূপ খননের কার্যক্রম চলছে।

এদিকে দেশের সর্ববৃহৎ দ্বীপ ভোলা জেলায় পাওয়া গ্যাসের প্রকৃত মজুদ জানতে সেখানে আরও ১৯টি নতুন কূপ খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের (বিজিএফসিএল) আওতায় তিতাস ও বাখরাবাদ গ্যাস ক্ষেত্রে ২টি এবং বাপেক্সের আওতায় শ্রীকাইল গ্যাস ক্ষেত্র ও মোবারকপুর স্ট্রাকচারে ২টিসহ মোট ৪টি গভীর কূপ খননের কার্যক্রম চলছে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে গ্যাসের সম্ভাবতা যাচাইয়ের জন্য বাপেক্স, বিজিএফসিএল ও এসজিএফএল’র উদ্যোগে সাইসমিক (বিশেষ জরিপ) ডাটা আহরণ ও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পেট্রোবাংলা।

বিভিন্ন গ্যাস কূপ খনন ও ওয়ার্কওভার কার্যক্রম সময়মতো শেষ করতে বাপেক্স এর নিজস্ব ৫টি রিগ এবং টার্ন কি পদ্ধতিতে নিয়োজিত চুক্তিভিত্তিক ঠিকাদারের ৩টি রিগসহ মোট ৮টি রিগ এর মাধ্যমে কূপ খনন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আগামী ২৭ নভেম্বর থেকে তিতাস-২৮ উন্নয়ন কূপ খনন কার্যক্রম শুরু হবে।

এ ছাড়া আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে বিজিএফসিএলের নিয়োজিত চুক্তিভিত্তিক ঠিকাদারের আরও ১টি রিগের মাধ্যমে তিতাস-৩১ গভীর কূপ খনন কার্যক্রম শুরু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এদিকে ভোলা এলাকায় ৫টি কূপ খননের লক্ষ্যে বাপেক্স ও চুক্তিভিত্তিক ঠিকাদারের মধ্যে দ্রুত চুক্তি সই হবে। এজন্য সেখানে আরও একটি রিগ নিয়োজিত হবে। খনন কার্যক্রমে গতি বাড়াতে বাপেক্সের ৫টি রিগের পাশাপাশি আরো ২টি নতুন রিগ কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

Share This Article