হাসিনার রায়ের পর মিছিল নিয়ে সাবেক এমপি হাবিবের ভাইয়ের বাড়ি ভাঙচুর, আগুন

বাংলাদেশ চিত্র ডেস্ক

রাজধানীর উত্তরায় ঢাকা-১৮ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ মোহাম্মদ হাবিব হাসানের ছোট ভাই নাদিম মাহমুদের বাড়ি ভাঙচুর ও গাড়িতে আগুন দিয়েছে একদল লোক। এ ঘটনায় দুজন আহত হয়েছেন।

উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের বটতলা এলাকার সাবেক সংসদ সদস্য হাবিব হাসানদের পুরোনো বাড়িতে আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

বাড়িটি ডুপ্লেক্স বাড়ি। পরে স্থানীয় জনতার সহযোগিতায় দেড় ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়। গাড়িটি নাদিম মাহমুদ ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করতেন।

এ ঘটনায় বাড়ির কেয়ারটেকার মো. হৃদয় ও নাদিম মাহমুদের কর্মচারী মো. বিপ্লব আহত হয়েছেন। তাঁদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম হয়েছে।

জানা গেছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রায় ঘোষণার পর উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের সাবেক এমপি হাবিব হাসানের বাড়ির সামনে একটি মিছিল বের করেছিল একদল লোক। পরে ওই মিছিলের লোকজন হঠাৎ করে হাবিব হাসানের ছোট ভাই নাদিম মাহমুদের বাড়িতে জোরপূর্বক ঢুকে ভাঙচুর ও বাড়ির সামনে পার্কিং করা একটি মাইক্রোবাসে আগুন লাগিয়ে দেয়। পরে খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন।

নাদিম মাহমুদের গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ কারখানা ওভেন লেভেলের সাব-কন্ডাক্টর ফারুক হোসেন বলেন, আসরের নামাজের সময় বাড়ির সামনে দিয়ে একটি মিছিল যাচ্ছিল। মিছিল থেকে হটাৎ করে লোকজন এসে সিকিউরিটি গার্ডকে মারধর করে গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। বাড়ি ভাঙচুর করে।

ফারুক হোসেন আরও বলেন, আগুন লাগানোর পাঁচ মিনিট আগে গাড়িটি বাইর থেকে এসে বাড়িতে ঢুকেছিল। পরে গাড়িটি পার্কিং করে চালক নেমে যাওয়ামাত্রই আগুন লাগানো হয়।

জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর নাদিম মাহমুদ ও তাঁর পরিবারের লোকজন কেউই বাড়িতে থাকেন না। শুধু কেয়ারটেকার ও কর্মচারীরা বাড়িটি দেখভাল করেন।

আগুন লাগানোর আগে বাড়ির গেটে দায়িত্ব পালন করছিলেন কেয়ারটেকার মো. হৃদয়। তিনি বলেন, ‘মিছিলের সময় গেট লাগানো ছিল। কিছু লোকজন আমাকে মারধর করে ভেতরে ঢুকে পড়ে। আর কিছু লোকজন টিন ও কাঠের বেড়া দিয়ে আটকানো গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। একপর্যায়ে বাড়ির গেটে পার্কিং করা গাড়িটি পুড়িয়ে ফেলে।’

কেয়ারটেকার হৃদয় বলেন, ‘হামলায় আমার ডান হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আহত হয়েছি।’

নাদিম মাহমুদের কর্মচারী মো. বিপ্লব বলেন, ‘আমি বাসায় কাজ করি। যখন লোকজন বাসায় ঢুকে ভাঙচুর চালাচ্ছিল, তখন আমি বাধা দিয়েছিলাম। পরে তারা আমাকে মারধর করেছে।’

ওই এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আগুন লাগার পর আমরা ফায়ার সার্ভিসকে কল দিয়েছিলাম। কিন্তু সময়মতো ফায়ার সার্ভিস আসে নাই। পরে নাদিম মাহমুদের মাদ্রাসার লোকজন ও কর্মচারীরা দেড় ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। আগুন নেভানোর পর ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসেছে। কিন্তু তার আগেই পুরো গাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।’

এদিকে বাড়ি ভাঙচুর ও গাড়িতে আগুন লাগানোর খবর পেয়ে তুরাগ থানা, উত্তরা পশ্চিম থানা, র‍্যাব-১ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন ছুটে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত র‍্যাব-পুলিশকে ঘটনাস্থলে থাকতে দেখা যায়।

ঘটনাস্থলে থাকা উত্তরা পশ্চিম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদউল্লাহ ফয়সল বলেন, ‘আগুনের খবর পেয়ে এসে দেখি গাড়িতে আগুন জ্বলছে। আরেকটা ছিনতাইয়ের ঘটনা ছিল, সেটা নিয়ে কাজ করছিলাম। তাই আসতে বিলম্ব হয়েছে।’

পরিদর্শক ফয়সল বলেন, কারা আগুন দিয়েছে, শনাক্ত করা যায়নি। কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

Share This Article