নির্বাচনে রেফারির ভূমিকায় থাকবে কমিশন 

বাংলাদেশ চিত্র ডেস্ক

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ রেফারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। তিনি বলেন, আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া সেই কাজ করা সম্ভব নয়। আমরা জাতির কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ একটি সুষ্ঠু, সুন্দর, গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন উপহার দেব।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকালে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন। 

বৈঠকে সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের জন্য বদ্ধপরিকর। তবে এর জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বশীল ভূমিকা অপরিহার্য। নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের দিন ও পরে এই তিনটি পর্যায়েই রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা লাগবে। 

সিইসি আরও বলেন, এই আলোচনাটি আমরা অনেক আগে থেকেই করার পরিকল্পনা করেছিলাম। তবে দেখা যাচ্ছে, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বর্তমানে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট এবং অন্যান্য সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব নিয়ে ঐক্যমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করছেন। সংস্কার কমিশন যখন তাদের রিপোর্ট প্রস্তুত করেছে, তখন তারা বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে অন্তত ৮০টিরও বেশি বৈঠক করেছে। কীভাবে নির্বাচন হওয়া উচিত, কী ধরনের ব্যবস্থা থাকা উচিত, কোন আইন-কানুনে সংশোধনী আনা দরকার—এসব বিষয়ে তারা ব্যাপক পরামর্শ নিয়েছে। 

এইসব সুপারিশের মধ্যে অনেকগুলোর সঙ্গে আমরা একমত হয়েছি। আবার কিছু বিষয়ে মন্তব্য দিয়েছি যে সেগুলোর জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত্য প্রয়োজন। যেহেতু ঐক্যমত্য কমিশন সরকারের একটি কমিশন, যা প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই আমরা একই সময় একই ব্যক্তিদের সঙ্গে সমান্তরাল আরেকটি আলোচনা চালাতে পারি না। একই রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে দুটি ভিন্নমুখী আলোচনা চালালে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারত। এজন্যই আমরা অপেক্ষা করেছি ঐক্যমত্য কমিশনের ফলাফল কী আসে, তা দেখার জন্য। এ কারণেই আমাদের সংলাপটি কিছুটা দেরিতে শুরু হয়েছে। 

তিনি বলেন, আমাদের আচরণবিধির খসড়া আমরা প্রস্তুত করার পর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছি। অনেক রাজনৈতিক দল এবং বিভিন্ন সংস্থা আমাদের কাছে লিখিত মতামত পাঠিয়েছে। সেই মতামতগুলো আমরা যথাসম্ভব অন্তর্ভুক্ত করেছি। 

সিইসি বলেন, এখন আমরা লক্ষ্য করছি অনেক জায়গায় পোস্টার টানানো হচ্ছে। অথচ আমরা পোস্টার টানানো নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছি এবং সেটি গণমাধ্যমেও জানিয়ে দিয়েছি। যদিও আচরণবিধি তখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হয়নি, তবু আমরা অনুরোধ করছি যারা পোস্টার লাগিয়েছেন, নিজেরাই তা সরিয়ে ফেলুন। এটা হবে ভদ্র আচরণের পরিচয়। আজ আচরণবিধি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ হয়েছে। সুতরাং অনুগ্রহ করে সবাই আচরণবিধি অনুযায়ী চলুন। কেউ যদি এর ব্যত্যয় ঘটান, তাহলে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নেব। আমরা কোনো পক্ষপাত করব না বরং নিয়ম ভঙ্গের ঘটনা ঘটলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আজ ১২ দলকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সকালে সংলাপে আলোচনা করবে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ।

Share This Article

এ সম্পর্কিত আরও খবর