ভূমি মানুষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ: উপদেষ্টা

বাংলাদেশ চিত্র ডেস্ক

ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, ‘ভূমি মানুষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ, নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক স্থিতিশীলতার অন্যতম প্রধান ভিত্তি। এ জন্য দেশের সার্বিক উন্নয়নে প্রয়োজন ভূমির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা। এ লক্ষ্যে ভূমি মন্ত্রণালয় হয়রানিমুক্ত জনবান্ধব অটোমেটেড ভূমিসেবা নিশ্চিতকরণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’

সোমবার (২৪ নভেম্বর) ভূমি ও খাদ্য মন্ত্রণালয় নামজারি সিস্টেমের অটোমেটেড ভার্সন ২.১ ও ভূমিসেবার মোবাইল অ্যাপ উদ্বোধন এবং ভূমিসেবা সিস্টেমে জয়পুরহাট জেলার শতভাগ খতিয়ান ও হোল্ডিংয়ের নির্ভুল তথ্য উন্মুক্ত করেন তিনি। সেখানে এসব কথা বলেন।

ভূমি উপদেষ্টা বলেন, নামজারি সিস্টেমের অটোমেটেড ভার্সন ২.১-এ ভূমিসেবায় মানুষের স্পর্শ এবং ভূমিসেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ওপর নির্ভরতা অনেক কমিয়ে ফেলা হয়েছে। নামজারির জন্য নাগরিকদের মাত্র একবার উপজেলা ভূমি অফিসে আসতে হবে মূল দলিল যাচাই ও শুনানির জন্য। এটাও করা হয়েছে জালিয়াতি করে নামজারি ও ভূমি হস্তান্তর প্রতিরোধের জন্য। এ ব্যবস্থায় নামজারি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পূবর্বর্তী মালিকের খতিয়ান হতে জমি কর্তন হয়ে নতুন মালিকের খতিয়ানে চলে আসবে। এর ফলে তথ্য গোপন করে জালিয়াতির মাধ্যমে একই জমি দ্বিতীয়বার বা বারবার বিক্রি করার সুযোগ বন্ধ হবে। এছাড়া নামজারির সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে হোল্ডিং তৈরি হয়ে যাবে এবং ভূমি মালিক ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করতে পারবেন। হোল্ডিং তৈরির জন্য ভূমি মালিকদের আর ভূমি অফিসে ধর্না দিতে হবে না। এতে দুর্নীতি ও জনহয়রানি অনেক কমে যাবে বলে আশা করা যায়।’

তিনি বলেন, “সব ভূমিসেবা সাধারণ মানুষের হাতের মুঠোয় আনার জন্য আজ মোবাইল অ্যাপ ‘ভূমি’ চালু করা হলো। ভূমি অ্যাপের মাধ্যমে নাগরিক ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান ও দাখিলা সংগ্রহ, নামজারির ফি প্রদান, ডিসিআর ও খতিয়ান সংগ্রহ এবং খতিয়ানের সার্টিফাইড কপি ও মৌজা ম্যাপ সংগ্রহ করতে পারবেন। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ভূমিসেবা ভূমি অ্যাপের মাধ্যমে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।”

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সারাদেশে ভূমিসেবা সিস্টেমে শতভাগ খতিয়ান ও হোল্ডিং এন্ট্রি করা এবং ভুল সংশোধনের জন্য ইউএনডিপি, বাংলাদেশের মাধ্যমে কাজ শুরু হয়েছে। গত ১৩ আগস্ট ফেনী জেলায় এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে। বর্তমানে ৮টি জেলায় পাইলটিং প্রায় শেষ পর্যায়ে। পর্যায়ক্রমে শতভাগ খতিয়ান ও হোল্ডিং এন্ট্রি এবং ভুল সংশোধনের এ কার্যক্রম সারা দেশে বাস্তবায়িত হবে। এর মাধ্যমে ভূমিসেবা সিস্টেমে আরও সহজ, জনবান্ধব ও স্বয়ংক্রিয় হবে।’

অনুষ্ঠানে ভূমিসেবায় কর্মকৃতি-ভিত্তিক মূল্যায়ন করে আট বিভাগের ৮ জন শ্রেষ্ঠ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা, ৮ জন সার্ভেয়ার, ৭ জন কানুনগো, ৯ জন সহকারী কমিশনার (ভূমি), ৮ জন রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর, ৮ জন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), ৮ জন জেলা প্রশাসক ও ২ জন বিভাগীয় কমিশনারকে সনদ ও সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।  

ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান (সচিব) এ জেড এম সালাহউদ্দিন নাগরী, ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফান লিলার প্রমুখ।

Share This Article