যুক্তরাজ্যের নিম্ন আয়ের শ্রমিকদের জন্য আগামী বছর থেকে কার্যকর হতে যাচ্ছে নতুন ন্যূনতম মজুরি হার। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, দেশের প্রায় তিন মিলিয়ন কর্মী এ বৃদ্ধি থেকে সরাসরি উপকৃত হবেন। অর্থমন্ত্রী রেচেল রিভস জানান, কর্মজীবী মানুষের আয় বাড়িয়ে ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয়ের চাপ কমানোই এ সিদ্ধান্তের লক্ষ্য।
নতুন হার অনুযায়ী, ২১ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী শ্রমিকদের ন্যাশনাল লিভিং ওয়েজ ঘণ্টায় £১২.৭১ নির্ধারিত হচ্ছে, যা বর্তমানে £১২.২১। এতে অনেকের বার্ষিক আয় উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে।
এ ছাড়াও ১৮ থেকে ২০ বছর বয়সীদের মজুরি £১০.৮৫ এবং ১৬–১৭ বছর ও শিক্ষানবিসদের জন্য মজুরি £৮ ধরা হয়েছে। তরুণদের মজুরি বৃদ্ধিতে সরকারের লক্ষ্য—অভিজ্ঞতা না–থাকা কর্মীদের ক্ষেত্রেও ন্যূনতম সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
রিভস বলেন, “মানুষের কঠোর পরিশ্রমের যথাযথ মূল্য দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অনেকেই এখনো মৌলিক খরচ চালাতে লড়াই করছেন—এই অবস্থা পাল্টাতে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে।”
তরুণদের চাকরির সুযোগ নিয়ে বাড়ছে সতর্কতা
তবে তরুণদের বেকারত্ব নিয়ে নতুন শঙ্কা তৈরি হয়েছে। নীতিনির্ধারকদের একটি অংশ মনে করছেন, অতিরিক্ত মজুরি বৃদ্ধি নিয়োগকারীদের দ্বিধাগ্রস্ত করতে পারে, বিশেষ করে এন্ট্রি–লেভেল কাজের ক্ষেত্রে। ১৬–২৪ বছর বয়সী নীট যুবকদের সংখ্যা দুই বছরে বেড়ে ৯৪০,০০০–এ পৌঁছেছে, যা বিশেষজ্ঞদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
রেজোলিউশন ফাউন্ডেশনের মতামত, তরুণদের ক্ষেত্রে মজুরি বৃদ্ধির গতি আরো পরিমিত হওয়া উচিত ছিল, কারণ শ্রমবাজার এখনো মহামারি–পরবর্তী চাপের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
ব্যবসায়ীদের যুক্তি
কর পরিমার্জন, ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্স এবং ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি—সব মিলিয়ে ছোট ব্যবসাগুলোর ওপর আর্থিক চাপ আরও বাড়ছে বলে মনে করছেন অনেক উদ্যোক্তা। তাদের মতে, গত পাঁচ বছরে ন্যূনতম মজুরির লাগাতার বৃদ্ধি পরিচালন খরচকে দ্রুত বাড়িয়ে তুলেছে।
শ্রমিক সংগঠনের প্রতিক্রিয়া
তবে শ্রমিক সংগঠনগুলো সরকারের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের মতে, ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি শুধু কর্মীদের জীবনে স্বস্তি এনে দেবে না, বরং স্থানীয় ব্যবসা ও খুচরা বাজারেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তরুণদের মজুরি বৈষম্য দূর করার উদ্যোগকেও তারা সমর্থন জানিয়েছে।
ইউআরএল কপি করা হয়েছে