মসজিদ ভেঙে বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের অভিযোগ

বাংলাদেশ চিত্র ডেস্ক

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ওয়াকফকৃত জমিতে ৩০-৩৫ বছর আগের নির্মিত পাকা মসজিদ ভেঙে বাণিজ্যিক বহুতল ভবন নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শহিদুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। ঢাকা-চট্টগ্রাম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ২ নম্বর ওয়ার্ডের সালুহাজী রোড এলাকায় বাইতুস সালাম জামে মসজিদটি নিজের ক্রয়কৃত জমিতে প্রতিষ্ঠা করেন ঢাকার সূত্রাপুর এলাকার শিল্পপতি হাজী সালাউদ্দিন মিয়া। কিন্তু মসজিদটি পুন:নির্মাণ করার কথা বলে সম্প্রতি মসজিদটি ভাঙার কাজ শুরু করেন শহিদুল ইসলাম। পরে নিজের জমি দাবি করে বাণিজ্যিক বহুতল ভবন নির্মাণ করার কথা বলায় এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের মাঝে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। ফলে মসজিদের জমি দখল মুক্ত করতে ওয়াকফ প্রসাশকসহ সরকারি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন আবুল খায়ের শান্ত নামে একজন।

এ ব্যাপারে জমি দাতা মরহুম সালাউদ্দিন মিয়ার ছেলে জসিম মিয়া বলেন, ৩০-৩৫ বছর আগে আমার বাবা নিজ অর্থায়নে দ্বিতীয় তলা মসজিদ নির্মাণ করে দুটি দলিলে ৭ শতাংশ জমি ওয়াকফ করে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের দোসর শহিদুল ইসলামসহ সঙ্গবদ্ধ একটি ভূমিদস্যু চক্র মসজিদ ভেঙে জমি দখল করে বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করার চেষ্টা করছে বলে জানতে পেরেছি। ব্যস্ততার কারণে আমি নিজে যেতে পারছি না। তবে স্থানীয় কয়েকজন গণমাণ্য ব্যক্তিদের দায়িত্ব দিয়েছি, তারা যেন মসজিদের জমি রক্ষা করার উদ্যোগ নেন।

এ ব্যাপারে নাসিক ২নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন বলেন, ৩০-৩৫ বছর যাবত এলাকাবাসী এ মসজিদে জুম্মার নামাজসহ ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে আসছে। তাছাড়া নামাজের সময় হলে দুরপাল্লার বাসগুলো মসজিদের পাশে দাড় করিয়ে যাত্রীরা এখানে নামাজ আদায় করেন। সেই মসজিদ ভেঙ্গে মার্কেট করার খবর পেয়ে এলাকবাাসী শুক্রবার ঐ মসজিদে গিয়ে মসজিদ ভাঙ্গার কাজে বাধা দেয়। পরবর্তীতে আমিসহ এলাকাবাসী এ ব্যপারটি সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি সাহেবকে অবহিত করি।

ওসি সাহেব বলেছেন, এখানে মসজিদ ছিল, মসজিদই থাকবে।

স্থানীয় মার্কাজুল আজিজ মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল আজিজ জানান, মরহুম সালাউদ্দিন মিয়া। পরে তিনি ২০০২ সালের ৪ এপ্রিল মসজিদের জন্য ৭ শতাংশ জমি ওয়াকফ করে দেন। ২০১৬ সালে সালাউদ্দিন মিয়ার মৃত্যুর পর আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজ করে বিএনপি সমর্থক শহিদুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা ক্রয়সূত্রে মালিক দাবি করে মসজিদের জমি নিজের বলে দাবি করেন। গণঅভ্যুত্থানের পর শহিদুল ইসলাম মসজিদের আশপাশের খালি জামিতে দোকানপাট নির্মাণ করে ভাড়া দেন। মসজিদ ভাঙা শুরু করলে আমিসহ স্থানীয় লোকজন গিয়ে বাধা দেই। দোকানপাটের ভাড়া কোনো ব্যক্তি নয়, মসজিদের তহবিলে জমা করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু শহিদুল ইসলাম তা মানছেন না।

অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি ক্রয়সূত্রে এ জমির মালিক। এখানে একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করা হবে। তবে নিচ ও দ্বিতীয় তলাটি মসজিদ হিসেবেই থাকবে। মসজিদের দেখা শোনা আমিই করব।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহিনূর আলম বলেন, মসজিদ ভেঙে ফেলার বিষয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে একজন অভিযোগ করতে এসেছিল। তখন অন্য পক্ষও থানা আসেন। এ সময় উভয় পক্ষ আমার কাছে আসলে স্থানীয়ভাবে মিলে মসজিদ উন্নয়নের জন্য কাজ করতে উভয় পক্ষকে বলে দিয়েছি।

Share This Article