শান্তি অর্জন পৃথিবী, সমাজ কিংবা ব্যক্তিজীবনের সবচেয়ে কঠিন কাজ বলে মন্তব্য করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম। তাঁর মতে, স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা কখনোই তাৎক্ষণিকভাবে আসে না; এটি ব্যক্তিগত আচরণ থেকে শুরু করে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক স্তর পর্যন্ত দীর্ঘ সময় ধরে গড়ে ওঠে।
আজ সোমবার (২৪ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘দ্য হাঙ্গার প্রোজেক্ট বাংলাদেশ’ আয়োজিত জাতীয় শান্তি সহায়ক সম্মেলন ২০২৫-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে তিন শতাধিক পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপ সদস্য অংশ নেন।
উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেন, ‘যে সমাজে ন্যায়, মানবিকতা, দায়িত্ববোধ, সহানুভূতি ও শিষ্টাচার লালিত হয়, সেই সমাজেই স্থায়ী শান্তির ভিত্তি তৈরি হয়। সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ‘সংঘাত নয়, শান্তি-সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ি’—এমন মানসিকতা গড়ে তুলতেই মূলত এই আয়োজন।’
তিনি বলেন, দ্য হাঙ্গার প্রোজেক্টের ‘শান্তি সহায়ক’ ধারণাটি সময়োপযোগী উদ্যোগ। সমাজে যে অসহিষ্ণুতা, অস্থিরতা ও উত্তেজনা বাড়ছে, তার পেছনে দীর্ঘদিনের বঞ্চনা ও ক্ষোভ কাজ করছে। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান ছিল বিচারহীনতা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে মানুষের প্রতিক্রিয়ার বহিঃপ্রকাশ।
ফারুক-ই-আজম বলেন, ‘শান্তি আমাদের চূড়ান্ত কামনা হলেও, সেই শান্তির পথে যেতে হলে বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড়াতে হয়। তাই স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ন্যায়, জবাবদিহি, মানবিকতা, সমতা ও ত্যাগের ভিত্তি শক্তিশালী করা প্রয়োজন।’
তিনি আরও বলেন, পরিবার থেকে রাজনৈতিক দল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় সরকার, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম—সব স্তরে সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া শান্তিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া সম্ভব নয়। শান্তি প্রতিষ্ঠা শুধু নীতিনির্ধারণের বিষয় নয়, এটি মানুষের মন, মূল্যবোধ ও আচরণের ওপর নির্ভরশীল সামাজিক প্রক্রিয়া।
তৃণমূল পর্যায়ে যারা শান্তি ও বোঝাপড়া তৈরিতে কাজ করছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনাদের নিষ্ঠা সমাজে স্থিতিশীলতা, সহযোগিতা ও মানবিকতার ভিত্তি আরও দৃঢ় করবে। ব্যক্তিগত ও সামাজিক স্তরে শান্তির মানসিকতা প্রতিষ্ঠা করতে পারলে আমরা একটি নিরাপদ, মানবিক ও স্থিতিশীল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব।’