বর্ণাঢ্য আয়োজনে কুমিল্লার কোটবাড়িতে সিসিএন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ চিত্র ডেস্ক

বাংলাদেশ চিত্র ডেস্ক ::

বর্ণাঢ্য আয়োজনে কুমিল্লার কোটবাড়ি এলাকায় অবস্থিত সিসিএন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রথম সমাবর্তনে সভাপতিত্বকালে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, যে কোনো মানুষের জীবনের সবচেয়ে চমৎকার অধ্যায় হচ্ছে শিক্ষাজীবন। তারণ্যের উচ্ছলতায় পরিপূর্ণ এই সময়ে শিক্ষার্থীরা নানা বিষয়ক জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি জীবন গঠনে মনোনিবেশ করে থাকে। এই সময়ে শিক্ষার্থীদের জীবনে তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে সচেতন হতে হয়। তবে সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে শিক্ষার্থীদের সামনে উন্নত স্বপ্ন থাকতে হয়। সেই স্বপ্ন শুধু ব্যক্তিগত লক্ষ্য অর্জন করার জন্য নয়, বরঞ্চ দেশ ও সমাজে ভূমিকা রাখার স্বপ্নও তাদের দেখতে হবে। দেশ ও সমাজের অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখতে পারলে শিক্ষার্থীরা সুশিক্ষিত হয়ে গড়ে উঠবে।

রোববার (৫ নভেম্বর) সিসিএন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাহাড়ঘেরা ক্যাম্পাসে ওই সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়। এতে আনন্দ-উৎসবে মেতে ওঠেন গ্রাজুয়েটরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনে অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিশিষ্টজনরা। এ দিন দুপুরে সভাপতির বক্তব্য রাখেন এলজিআরডি মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এ সময় শিক্ষার্থীদের আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে উৎকর্ষতা অর্জনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, মার্ক জুকারবার্গ, জেফ বাজোস, স্টিভ জবস, এলোন মাস্ক কিংবা জ্যাক মা প্রযুক্তির দক্ষতা ও উদ্ভাবন কাজে লাগিয়ে সারা বিশ্বে নিজেদের সুনাম ও অবস্থান অর্জন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করার ফলে আজকের শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের যেকোনো অঞ্চলে বসবাস করে প্রযুক্তিগত জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে নিজেদের স্বাবলম্বী করতে পারছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটি বাংলাদেশ দেখতে চাই, যেখানে শিক্ষার্থীরা চাকরির পিছনে না ছুটে প্রযুক্তি বিষয়ক উদ্যোক্তা হবে।’ সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অনেক বিখ্যাত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব দিচ্ছে আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের দক্ষ মানুষজন। আমি প্রত্যাশা রাখব সিসিএন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশের কল্যাণে ভূমিকা রাখবে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গঠনে ভূমিকা রাখবে।’

মো.তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমান সরকার যখন ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণ করে, তখন বাংলাদেশের জিডিপির আকার ছিল ৪৭ বিলিয়ন ডলার, আজকে তা ৫০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ ও যোগ্য নেতৃত্বের ফলে দেশের অর্থনৈতিক এই অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশ অনুন্নত দেশ থেকে আজকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে।’

এ সময় সিসিএন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তাদের নিজেদের অর্জিত জ্ঞান কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আজকের পৃথিবীতে দখলদারিত্বের মাধ্যমে কেউ রাজত্ব করতে পারে না, জ্ঞান এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে নিতে হয়।’

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাসহ ২১০০ সালের মধ্যে ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি সুখী ও সমৃদ্ধ সমাজ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করার জন্যই সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

সমাবর্তনের গেস্ট অব অনার হিসাবে উপস্থিত ছিলেন রিপাবলিক অব মালদ্বীপের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. আবদুল্লা রাশিদ আহমেদ। বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আজকে পাহাড় ঘেরা পরিবেশে অবস্থিত সিসিএন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে গ্রাজুয়েটদের মিলন মেলা দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। আমি চাইবো এই গ্রাজুয়েটরা দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করবে।’

অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসাবে আরও উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। সমাবর্তন বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল শ্রী সিদ্ধার্থ শংকর দে। সমাবর্তনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিসিএন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলাউদ্দিন এবং অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ড. মো. তারিকুল ইসলাম চৌধুরী।

Share This Article