শেনজেনভুক্ত বাল্টিক দেশ লিথুয়ানিয়া। বাল্টিক সমুদ্রের তীরে অবস্থিত বলে এই দেশকে বাল্টিক দেশ বলা হয়। লিথুয়ানিয়া একসময় অনেক বড় একটি দেশ ছিল। বর্তমান বেলারুশ ও ইউক্রেনের অধিকাংশ এলাকা এর অধীনে ছিল।
১৯১৮ সালে একটি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে জন্ম নিলেও ১৯৪০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন এটি দখলে নিয়ে নেয়। ১৯৯০-এর দশকে দেশটি অর্থনীতি বিরাষ্ট্রীয়করণে মনোযোগ দেয়। কিন্তু অর্থনৈতিক মন্দা, মুদ্রাস্ফীতি ও বেকারত্ব সমস্যা ভয়াবহ রূপ লাভ করে। ২১শ শতকে এসে লিথুয়ানিয়া ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদান করেছে। পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে জনসংখ্যা মাত্র ২৭.৩০ লাখ। তবে জনসংখ্যা কম হলেও ইউরোপ এর দেশ হিসেবে প্রতি বছর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ কাজের সন্ধানে যায়।
অন্যান্য দেশের তুলনায় লিথুনিয়া ইউরোপের মধ্যে অনেক জনপ্রিয় একটি দেশ। অনেক মানুষের স্বপ্ন রয়েছে ইউরোপ মহাদেশের যে কোনো রাষ্ট্রে যাওয়ার। ইউরোপের মধ্যে অনেকগুলো দেশ রয়েছে। এই দেশগুলোর মধ্যে লিথুনিয়া অন্যতম। তবে প্রচার এবং না জানার অভাবে এদেশটি বাংলাদেশীদের সংখ্যা অনেক কম। UNDESA- ২০২০ সাল এর তথ্যনুসারে দেশটিতে বাংলাদেশি বৈধ মাইগ্রেন্ট এর সংখ্যা মাত্র ৪৪ জন। তবে দেশটিতে রয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজের অপার সম্ভাবনা।
প্রতি বছরেই লিথুনিয়ায় বিভিন্ন কাজের জন্য শ্রমিক নিয়োগ করে থাকেন। লিথুনিয়ায় অনেক ধরনের কাজ রয়েছে। আপনি যেকোনো ধরনের পছন্দ অনুযায়ী লিথুনিয়ার ভিসা নিতে পারবেন। অনলাইনের মাধ্যমে খুব সহজেই লিথুনিয়া ভিসার আবেদন করা যায়।
লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা:
অনেক মানুষের স্বপ্ন রয়েছে ইউরোপে লিথুনিয়া কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য। কারণ অন্য দেশের তুলনায় লিথুনিয়ায় কাজ করলে বেশি টাকা বেতন পাওয়া যায়। প্রতিবছরের সরকারি ভাবে লিথুনিয়া বিভিন্ন কাজের জন্য শ্রমিক নিয়োগ করে।
সরকারি সার্কুলার অনুযায়ী ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেয়ে গেলে কম খরচের মধ্যেই লিথুনিয়া পৌঁছানো সম্ভব। লিথুনিয়ার ওয়ার্ক পারমিট ভিসা কয়েকটি ক্যাটাগরি রয়েছে। ৪টি ক্যাটাগরীতে লিথুনিয়ার ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়া যায়।
সাধারণ কর্মীদের জন্য = ওয়ার্ক পারমিট ভিসা।
অভিজ্ঞ কর্মীদের জন্য = ইইউ ব্লু কার্ড
সিজনাল = কাজের ভিসা।
ইন্ট্রা = কোম্পানির ভিসা
লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন:
বর্তমান আধুনিক যুগে অনলাইনের মাধ্যমে যে কোন ধরণের কাজ করা যায়। আপনি ঘরে বসে থেকেই মোবাইল অথবা কম্পিউটারের সাহায্যে লিথুনিয়ার ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় আবেদন করতে পারবেন। বর্তমান অনেক মানুষের চাহিদা রয়েছে লিথুনিয়া কাজের ভিসা যাওয়ার জন্য। নতুন করে সরকার বিভিন্ন কাজের জন্য শ্রমিক নিয়োগ শুরু করেছেন।
আপনি যদি সার্কুলার অনুযায়ী আবেদন করতে চান তাহলে প্রথমে আপনাকে গুগল ক্রোমে প্রবেশ করতে হবে। এরপর lithuania visa application লিখে সার্চ করলেই আপনি অফিশিয়াল ওয়েবসাইট পেয়ে যাবেন। সে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনাকে ভিসা আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে। অনলাইনের মাধ্যমে খালিঘরগুলো সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করে এজেন্সির সাহায্য নিলেই আপনি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেয়ে যাবেন।
লিথুনিয়া যেতে কত টাকা লাগে:
এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে চাইলে সম্পূর্ণ আপনার ভিসার ক্যাটাগরির উপর খরচ বহন করতে হবে। কারণ ভিসার ক্যাটাগরি অনুযায়ী দাম নির্ধারণ করা হয়। আপনি যদি সরকারি ভাবে লিথুনিয়ার ভিসা পেয়ে যান তাহলে কম খরচের মধ্যেই লিথুনিয়া পৌঁছানো সম্ভব।
সর্বোচ্চ ৪ লাখ টাকা থেকে ৫ লাখ টাকার মধ্যে সরকারি ভাবে লিথুনিয়া ভিসা করতে পারবেন। এবং আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে এজেন্সির মাধ্যমে লিথুনিয়ার ভিসার আবেদন করেন তাহলে স্টুডেন্ট ভিসা করতে খরচ হবে ৪ লক্ষ টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা। এবং কাজের ভিসা করতে চাইলে আপনার খরচ হবে ৭ লাখ টাকা থেকে ৯ লাখ টাকা।
লিথুনিয়ায় কোন কাজের চাহিদা বেশি:
আপনি লিথুনিয়া গেলে কয়েক ধরনের কাজ করতে পারবেন। লিথুনিয়ায় কাজ অনুযায়ী শ্রমিক অনেক কম। এজন্য বিভিন্ন দেশ থেকে তারা শ্রমিক নিয়োগ করে থাকেন। অনেকেই লিথুনিয়া যাওয়ার আগে কোন ধরনের কাজের চাহিদা বেশি এই তথ্যগুলো জানার চেষ্টা করে। তবে স্থানীয় প্রবাসীদের থেকে জানা গেছে, দেশটিতে কন্সট্রাকশন, ইলেকট্রিক্যাল, ড্রাইভিং, ওয়েল্ডার, ফ্যাক্টরি, রেস্টুরেন্ট, ক্লিনার এধরণের শ্রমিকের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।
লিথুনিয়া কাজের বেতন কত:
সবাই কোন কাজ শুরু করার আগে সে কাজের পারিশ্রমিক সম্পর্কে জানার চেষ্টা করে। বর্তমান অনেক মানুষ লিথুনিয়া কাজের উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন। কিন্তু বেতন কত নির্ধারণ করা হয় এই তথ্যগুলো জানেন না। অনেকেই অনলাইনের মাধ্যমে লিথুনিয়া কাজের বেতন সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানার চেষ্টা করতেছেন।
অর্থাৎ লিথুনিয়া আপনার অভিজ্ঞতার উপর কাজের বেতন নির্ধারণ করা হবে। লিথুনিয়ায় মূলত ঘণ্টা ভিত্তি করে ইউরো দিয়ে থাকে। আপনি যদি নতুন হয়ে থাকেন তাহলে প্রতি মাসে ৫০০ থেকে ৬০০ ইউরো পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন। বাংলাদেশের টাকা হিসাব করলে হবে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। এবং আপনার কাজের অভিজ্ঞতা ভালো থাকলে তাহলে প্রতি মাসে বাংলাদেশি টাকায় ৮০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত বেতন উত্তোলন করতে পারবেন।
আপনার মতামত লিখুন :