উপজেলা নির্বাচন: শেষ মুহূর্তে প্রচার- প্রচারণায় সরগরম।

বাংলাদেশ চিত্র ডেস্ক

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শেষ ধাপে ব্রাহ্মনবাড়িয়া সদর, নবীনগর ও ভারত সীমান্তবর্তী বিজয়নগর উপজেলার নির্বাচনে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। জয়ের আশায়  প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট চাইছেন, দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। বিভিন্ন স্থানে যানবাহন চালকদের মাধ্যমে বরাদ্ধকৃত মার্কার প্রচার করছেন প্রার্থীরা।

ভোটারা বলেন, সৎ যোগ্য ও এলাকায় উন্নয়নে যে ভূমিকা রাখবে, তাকে তারা ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করবেন। সকলে আশাবাদী সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। সাধারণ ভোটাররা সৎ, যোগ্য ও নিষ্ঠাবান প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করতে চান। তবে উপজেলা পরিষদের জনপ্রতিনিধির পদ নামক সোনার হরিণের আশায় প্রার্থীরা বিরামহীন চালিয়ে যাচ্ছেন দলীয় প্রচার প্রচারণা। দিন যতই যাচ্ছে প্রার্থী,কর্মী ও ভোটারদের মধ্যে বাড়ছে উত্তেজনা। প্রার্থীর পক্ষে কর্মীরা সালাম জানাচ্ছেন ভোটারদেরকে ।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা কার্যালয় মতে,

তিন উপজেলার মধ্যে সদর উপজেলার চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এদের মধ্যে  জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও জাতীয় বীর আবদুল কুদ্দুস মাখনের ছোট ভাই হাজি মোঃ হেলাল উদ্দিন ঘোড়া প্রতীকে নির্বাচন করছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক শাহাদত হোসেন শোভন আনারস  প্রতীকে নির্বাচন করছেন। নির্বাচনে আনারস ও ঘোড়ার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে বলে মনে করছেন জনসাধারন। এছাড়াও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এড লোকমান হোসেন কাপ পিরিচে প্রতীক পাওয়ার পর নির্বাচন থেকে সরে গেছেন। অন্য প্রার্থীরা হলেন সাবেক আওয়ামী লীগের নেতা কাজী সেলিম রেজা দোয়াত কলম প্রতীকে নির্বাচন করছেন। এছাড়াও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।

বিজয়নগরে ৬ জন চেয়ারম্যান পদে হেভিওয়েট ও ধনাঢ্য প্রার্থীর মধ্যে মুলত প্রতিদ্বন্দ্বীতার আবাস পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাছিমা মোকাই আলী ঘোড়া প্রতীক ও বিএনপির যুব দল হতে বহিষ্কৃত যুগ্ন সম্পাদক জাবেদ আনারস প্রতীকে নির্বাচন করছেন। এছাড়া অন্য চার প্রার্থীর তেমন আলোচনায় দেখা যায় না। এখানে ভাইস (পুরুষ)চেয়ারম্যান পদে ৯ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন বিভিন্ন প্রতীকে প্রচার চালাচ্ছেন।

নবীনগর উপজেলা নির্বাচনে ৮ জন প্রার্থী হিসেবে প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। এখানে অঞ্চলভিত্তিক প্রার্থী হওয়া ভোটের হিসাব অন্য দুই উপজেলা থেকে ভিন্ন হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এদের মধ্যে হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে ধরা হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা যুব লীগের সাধারন সম্পাদক এড সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস ঘোড়া প্রতীক ও বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত ফারুক আহমেদ আনারস প্রতীকে এবং কেন্দ্রীয় যুব লীগের সদস্য ও সাবেক ছাত্রলীগের নেতা  এইচ এম আলামিন মোটরসাইকেল প্রতীকের। এছাড়াও রয়েছেন কাজী জহির উদ্দিন সিদ্দিক টিটু কৈ মাছ, শাহ আলম(কাপ পিরিচ),  হাবিবুর রহমান হাবিব(দোয়াত কলম), জেলা পরিষদের সাবেদ সদস্য নুরুন্নাহার বেগম টেলিফোন প্রতীক। এছাড়াও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থীর বিভিন্ন প্রতীকে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন।

এদিকে প্রচারাভিযান চালাতে গিয়ে অধিকাংশ প্রার্থীই মানছে না নিবার্চন কমিশনের ঘোষিত আচরণ বিধি। আচরণবিধি ভঙ্গ করেই প্রতিদিন কোথাও কোথাও চলছে মিটিং, মিছিল ও শোভাযাত্রা।

একাধিক সূত্রে জানা যায়, রাত গভীর হওয়ার সাথে সাথে চলে আচরণবিধি লংঘণের নানা চিত্র। কোন কোন প্রার্থীরা কর্মী সমর্থকদের নিয়ে মৌন মিছিল, মাইকিং করে গ্রামীণ জনপথ হাট-বাজারসহ বিভিন্ন জনবহুল মোড়ে ভিড় করার অভিযোগ উঠেছে। তাছাড়া বিভিন্ন ক্লাব, মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দিরে চলছে উদার হাতের নানা অনুদান। আশ্বস্ত করা হচ্ছে নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারলে রাস্তা-ঘাট, স্কুল কলেজ, মাদ্রাসাসহ এলাকার সার্বিক উন্নয়নের, দূর করা হবে সমাজের সকল অপরাধ, সোচ্চার করা হবে মাদক, চুরি বিরোধী অভিযান।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৫জুন চতুর্থ দফায় সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ব্যালটের মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর, নবীনগর ও বিজয়নগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এতে  ৪২টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভা নিয়ে এ তিনটি উপজেলা গঠিত। এই তিন উপজেলায় ভোটার সংখ্যা ১০ লক্ষ ৫৩ হাজার ৮৯১। এরমধ্যে পুরুষ ৫ লক্ষ ৪৯  হাজার ৭৭৯, মহিলা ৫ লক্ষ ৪ হাজার ১১০ জন এবং হিজড়া ভোট ২ জন।

Share This Article