সাত কলেজের সনদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের “অধিভুক্ত” শব্দটি নিয়ে বাড়ছে জটিলতা। শিক্ষার্থীদের দাবি, এরমাধ্যমে তাদের সাথে বৈষম্য করা হচ্ছে। তাই, স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় চাচ্ছে তারা। রাজপথেও বেশ কয়েকদিন ধরে আন্দোলনে সোচ্চার শিক্ষার্থীরা। এরই ধারাবাহিকতায়, রাজধানীর সায়েন্সল্যাবে, আজ বেলা ১১টায় ‘ব্লকেড কর্মসূচি’ ডেকেছে ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা।
একদিনের মধ্যে সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করার সিদ্ধান্তটি অপরিণামদর্শী ছিলো বলে মনে করেন শিক্ষা গবেষকরা। আর সেদিন থেকেই ভোগান্তির শুরু লাখ শিক্ষার্থীর। সাত কলেজ অধিভুক্তির পর বড় সমস্যা ছিলো ঢাকা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্যদের মধ্যে দন্দ্বের কারণে ফলাফল প্রকাশে বিলম্ব। এরপরই তৈরি হয় বড় ধরনের সেশনজট।
কিছুদিন পরপর আন্দোলনে দেখা যেতো সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের। সেশনজট সমস্যা এখন না থাকলেও শিক্ষার্থীদের আপত্তি সাত কলেজকে দেয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদপত্র নিয়ে। তাদের দাবি অধিভুক্ত শব্দের কারণে পরিচয় সংকটে ভুগছেন তারা।
একজন শিক্ষার্থী বলেন, মোট ৩৪টি বৈষম্য তুলে ধরা হয়েছে। সার্টিফিকেটে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হচ্ছে ‘অ্যাফিলিয়েশন’ শব্দটি ভিন্ন ফন্টে দিয়ে দেয়া। এটি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনে একটি খারাপ পরিবেশ তৈরি করছে।
তবে, সমস্যা আরও আছে। সাত কলেজের একাডেমিক বিষয় দেখভাল করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আর প্রশাসনিক বিষয় দেখে মন্ত্রণালয়। এতে তৈরি হয়েছে শিক্ষক ও বাজেট সংকটসহ নানা সমস্যা।
দেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকে সমস্যা নিয়ে সরব হয়েছেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। সরকার সমাধানের জন্য মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তা, শিক্ষক ও অধ্যক্ষদের নিয়ে একটি কমিটি করে দেয়। ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ বলছেন, অধিভুক্তির বড় কারণ ছিল শিক্ষার বৈষম্য দূর করা। কিন্তু আদতে সেটা হয়নি।
ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক একেএম ইলিয়াস বলেন, সুপিরিয়রিটি ও ইনফিউরিটি কমপ্লেক্স। এগুলো আসলে আলোচনা করলে অনেক কিছুই সম্ভব ছিলো। বিশেষকরে, ভর্তি পরীক্ষা ও শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে সমস্যাগুলোকে কীভাবে কমানো যায়, সেই পথ খুঁজে বের করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, যথাসম্ভব চেষ্টা করা হচ্ছে যাবতীয় সমস্যা নিরসনে। তবে, স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি এবং সনদ থেকে অধিভুক্তি শব্দ তুলে দেয়া একান্তই রাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাহালুল হক চৌধুরী বলেছেন, আমাদের একটাই সমস্যা ছাত্রদের শিক্ষক নেই। মন্ত্রণালয় থেকে যদি শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষক না দেয়, প্রিন্সিপাল যদি যোগাযোগ না করে, তাহলে, সময়মতো শিক্ষার্থীরা কোর্স শেষ করতে পারে না।
সমস্যা হলো, সংকট নিরসনে গঠিত কমিটিকেও মানতে চাইছেনা শিক্ষার্থীরা। এরমধ্যে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি যুক্ত করার দাবি তাদের।
আপনার মতামত লিখুন :