নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা আজ, গুরুত্ব পেতে পারে যেসব বিষয়

বাংলাদেশ চিত্র ডেস্ক

চলতি অর্থবছরের শেষ ছয় মাসের (জানুয়ারি-জুন, ২০২৫) জন্য আজ (সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় ঘোষণা করা হবে নতুন মুদ্রানীতি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রিজার্ভ ধরে রাখা ও বিনিময় হারের স্থিতিশীলতা গুরুত্ব পাবে এবারের নীতিতে। তবে সুদের হার না বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের কৌশল নেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মনযোগ থাকবে বিনিয়োগ বাড়ানোর।

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে সরকার পরিবর্তন হলেও নতুন গভর্নর পুরোনো মুদ্রানীতি পর্যালোচনা করেননি। তবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজারে টাকার প্রবাহ কমাতে বাড়িয়েছেন নীতি সুদহার। যদিও বাজারে তার প্রভাব খুব একটা পড়েনি। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত চড়েই ছিল সাধারণ মূল্যস্ফীতি। জানুয়ারিতে সামান্য কমলেও এখনো চড়া খাদ্য মূল্যস্ফীতি।

এমন বাস্তবতায় গভর্নর হিসেবে প্রথমবারের মতো মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছেন ড. আহসান এইচ মনসুর। জানুয়ারি-জুন সময়ের জন্য দেয়া এই নীতির ভঙ্গি এবার অত্যন্ত সতর্কতামূলক হবে। সুদের হার না বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের কৌশল নেয়া হতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকী বলেন, এবারের মুদ্রানীতি অত্যন্ত সতর্কতামূলক হবে। কারণ দেশের অর্থনীতি স্বাভাবিক সময়ে নেই। সেগুলো মাথায় রেখেই করা হচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সমুন্নত করা, বিনিময় হারকে স্থিতিশীল করা ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি বিদ্যমান সমস্যাগুলো চিহ্নিত করাই মূল লক্ষ্য।

সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বাস্তবসম্মত নয় বলে অভিমত ব্যবসায়ীদের। তারা জানান, দেশের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভরশীল। তাই সুদ বাড়লে পণ্য উৎপদান খরচ বেড়ে মূল্যস্ফীতি উসকে যায়। এজন্য ভারসাম্যপূর্ণ মুদ্রানীতি প্রয়োজন।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় আমাদের প্রেক্ষাপট ভিন্ন, কারণ সেখানে ভোক্তা লোন বেশি। যখন সুদ বাড়ে ভোক্তা তখন কেনাবেচা কমিয়ে দেয়। বেশি সংকোচন নয় আবার খুলে দিলেও হবে না, মাঝামাঝি একটা মুদ্রানীতি করতে হবে।

মুদ্রানীতির আরেক উদ্দেশ্য বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখা। এজন্য রিজার্ভের পতন ঠেকানোর কৌশলও থাকবে। এই কৌশল বাস্তবায়ন করতে গিয়ে খুব বেশি সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি না করার পরামর্শ অর্থনীতি বিশ্লেষকদের।

অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইএসএস) গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবীর বলেন, অনন্তকাল ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি থাকতে দেয়া যাবে না। মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনতে হবে। একইসঙ্গে কমিয়ে আনতে হবে সুদের হার। নমনীয় করতে হবে মুদ্রানীতিও। যা দেশ ও ব্যবসার জন্য ভালো হবে।

Share This Article