![](https://bdchitro.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
জামাল কাড়াল বরিশা ব্যুরো প্রধান ::
২০১৬ সালের ১৪ মার্চ নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে গুজব ছড়িয়ে হেযবুত তওহীদের দুই সদস্যকে হাত পায়ের রগ কেটে, চোখ উপড়ে, জবাই করে ও পুড়িয়ে হত্যার প্রতিবাদে এবং অতি দ্রুত আসামিদের বিচার কার্যক্রম শুরু করার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘বিচারে দীর্ঘসূত্রিতা বিচারহীনতার নামান্তর’- এই স্লোগানে আজ ১৯ মার্চ, ২০২৩ রবিবার সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিটে বরিশাল বিভাগীয় সাংবাদিক পরিষদ হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করে বরিশাল জেলা হেযবুত তওহীদ।
হেযবুত তওহীদের বরিশাল জেলা সভাপতি মো: কবির মৃধার সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে মূখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শোনান এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন, হেযবুত তওহীদের বরিশাল বিভাগীয় আমির মো: আল আমিন সবুজ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বরিশাল জেলা হেযবুত তওহীদের সাবেক সভাপতি মো: রুহুল আমিন মৃধা, বরিশাল মহানগর সভাপতি নূর মোহাম্মদ আরিফ, মহানগর হেযবুত তওহীদের সেক্রেটারী মো: আতাউর রহমান প্রমুখ।
মূখ্য আলোচক মো: আল আমিন সবুজ তার বক্তব্যে বলেন, নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে ধর্মব্যবসায়ী উগ্রবাদিদের হত্যাযজ্ঞের ৭ বছর পেরিয়ে গেলেও এর বিচার শুরু হয়নি, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। এমন নির্মম পৈশাচিক হত্যাকা-ের বিচার এভাবে ঝুলে থাকতে পারে না। বিচারের দীর্ঘসূত্রিতার ফলে আসামিরা এখন বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই অপপ্রচারকারী ও হামলার চক্রান্তকারী কুচক্রী মহলকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখী করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে। এদের বিরুদ্ধে এখনই আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে, এরা যে কোনো ধরনের তা-ব সৃষ্টি করতে পারে। সেক্ষেত্রে কেবল হেযবুত তওহীদই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, সেই সাথে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সমাজ, ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশ। এসময় ধর্মব্যবসায়ী উগ্রবাদীদের দ্বারা যেন আর একটা প্রাণও না ঝরে এবং দ্রুততার সাথে ইব্রাহিম রুবেল ও সোলায়মান খোকনের হত্যাকারীদের বিচারকার্য শুরু করার জোর দাবি জানান তিনি।
এসময় তিনি নিম্নলিখিত দাবিগুলো পেশ করেন-
১. ২০১৬ সালের ১৪ই মার্চে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার চাষীরহাটের পোরকরা গ্রামে মিথ্যা গুজব রটিয়ে হেযবুত তওহীদের মাননীয় এমামের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও প্রকাশ্য দিবালোকে দুইজনকে জবাই করে হত্যার ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে যারা জড়িত ছিল ও পরোক্ষভাবে যারা ইন্ধন যুগিয়েছিল তাদেরকে দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে।
২. হামলাকারীদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে যাদের নাম চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, গ্রেফতারও করা হয়নি, কিন্তু এখন তাদের নাম, ঠিকানা ও হামলায় জড়িত থাকার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য বেরিয়ে আসছে। এই হামলাকারীদেরকেও দ্রুত গ্রেফতার করে সম্পূরক অভিযোগপত্রের মাধ্যমে বা যথাযথ প্রক্রিয়ায় তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
৩. উগ্রবাদী সন্ত্রাসী ও ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠী আবারও মিথ্যা হ্যান্ডবিল রচনা করে বিভিন্ন মসজিদে, মাদ্রাসায়, রাস্তাঘাটে, দোকানে বিতরণ করছে এবং যেটা আমরা বলিনি, করিনি, যেটা আমাদের আকিদা নয়, বিশ্বাস নয়, সেগুলোকে আমাদের উপর আরোপ করছে। তারা চাচ্ছে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করতে। এসব মিথ্যা হ্যান্ডবিল বাজেয়াপ্ত করে এহেন অপপ্রচারের সাথে জড়িতদেরকে গ্রেফতার করে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।
৪. সোনাইমুড়িতে বর্তমানে আমরা অন্তত ৪২ টি উন্নয়ন প্রকল্প গড়ে তুলেছি। সেই উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে থাকা স্থাপনাগুলো যেমন- স্কুল, মসজিদ, মক্তব, গবাদি পশুর খামার, মৎস্য খামার, বিভিন্ন ধরনের শিল্প কারখানা, কুটির শিল্প, ব্যবসা বাণিজ্য ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি সেখানে অবস্থানরত সদস্য-সদস্যাদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
৫. সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে চাষীরহাট ইউনিয়ন ও আশপাশের এলাকাগুলোতে পরিকল্পিতভাবে ওয়াজ মাহফিলের নামে সভা-সমাবেশ করে উগ্রবাদী বক্তাদের ভাড়া করে এনে হেযবুত তওহীদের এমামের নাম ধরে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদেরকে হামলা করার প্ররোচনা দেওয়া হচ্ছে। এ ধরনের উদ্দেশ্যমূলক সমাবেশ নিয়ন্ত্রণ করে উগ্রবাদী বক্তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। তাছাড়াও যে সমস্ত তাত্ত্বিক গুরু বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদ-পদবী ব্যবহার করে ওয়াজের নামে সারাদেশে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে, গুজব রটাচ্ছে ও হামলার উসকানি দিচ্ছে, তাদেরকে সনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৬. ধর্মব্যবসা, সাম্প্রদায়িকতা, অপরাজনীতি, মাদক, হুজুগ, গুজব, জঙ্গিবাদ ইত্যাদির বিরুদ্ধে সারাদেশে হেযবুত তওহীদ যে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে সেই অনুষ্ঠানগুলোর যথাযথ নিরাপত্তা প্রদান করতে হবে।
৭. ফেসবুক, ইউটিউবসহ সকল সোশ্যাল মিডিয়াতে আসল অথবা ফেক আইডি ব্যবহার করে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে মিথ্যা অপপ্রচারমূলক কন্টেন্ট, হত্যার হুমকি, গুজব রটনা, মিথ্যা ফতোয়া প্রদানের মাধ্যমে যারা সন্ত্রাস সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে তাদের পরিচয় ও অবস্থান চিহ্নিত করে আইসিটি আইনের আওতায় আনতে হবে।