তারেক রহমানের হাত ধরে জিয়াউর রহমানের প্রত্যাশার বাস্তবায়ন ঘটছে

admin
Highlights
  • ‘আই উইল মেক পলিটিক্স ডিফিকাল্ট ফর পলিটিশিয়ান’

শেখ রিফাদ মাহমুদ 

রাজনৈতিক নেতা বলতে আমরা বুঝি শোডাউন, পোস্টার, ব্যানার সহ বিভিন্ন। বিএনপির রাজনীতিতে এখন সেগুলো অতিত ইতিহাস। বর্তমানে বিএনপি শোডাউন, ব্যানার, পোস্টারের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। ইতিমধ্যে সারাদেশে ব্যানার অপসারণের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে নির্দেশনাও দিয়েছে। যা আমাদের দেশীয় রাজনীতিতে ভিন্নধাঁচের পজিটিভ বার্তা দিচ্ছে। সেকেলে আমলের গতানুগতিক ধারার ইতি ঘটিয়ে আধুনিক ধারার সূচনা ঘটছে। 

বর্তমানে বিএনপি সাংগঠনিকভাবে সবচেয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। নেতাকর্মীদের কোনো অপরাধ প্রশ্রয় দিচ্ছেনা, বরদাস্ত করছেনা। সর্বমহলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় বিএনপি ক্লিন, গঠনমূলক এবং জনগণের চাহিদার ভিত্তিতে যুগোপযোগী রাজনৈতিক চর্চা করছে। ছাত্রদল কেন্দ্রীয়ভাবে সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যেয়ে মাঠের মধ্যে বসে শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করছে, তাদের ইচ্ছা, আকাঙ্খা, চাহিদা ও মতামত জানতে নিরলস পরিশ্রম করছে। স্টেজ বিহীন এমন সাদামাটা রাজনৈতিক চর্চা সকলের মাঝে পরিবর্তনের আলো দেখাচ্ছে। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল। ইতিপূর্বে ডানপন্থী দলগুলোর মাঝে এমন চর্চা দেখা যায়নি। 

বিভিন্ন নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দখল, হামলা ইত্যাদি অভিযোগ এবং দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে মোটরসাইকেল শোডাউন, হুমকি, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থেকে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে। যা দলীয় নেতাকর্মীদের চেইন অফ কমান্ডে আনতে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ। এটি দলীয় শৃঙ্খলার একটি শক্তিশালী উদাহরণ, যা জিয়াউর রহমানের প্রত্যাশার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ, যেখানে রাজনীতিতে শুদ্ধতা, সততা এবং জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়। এখানে একটি বিষয় পরিস্কার যে, বিএনপি এখন রাজনৈতিক শোডাউন এবং বাহুল্যপূর্ণ প্রদর্শনীর বদলে জনগণের আস্থা ও সমর্থন অর্জনে মনোযোগী হয়ে উঠেছে। 

শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বক্তব্য “আই উইল মেক পলিটিক্স ডিফিকাল্ট ফর পলিটিশিয়ান” অনেক গভীর অর্থ বহন করে। এটি ছিল তাঁর রাজনৈতিক দর্শন এবং উদ্দেশ্যের একটি প্রকাশ। তিনি এই মন্তব্যটি করেছিলেন যখন বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ অস্থির ছিল এবং রাজনীতির প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা কমে যাচ্ছিল। তিনি বুঝেছিলেন, রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে স্বার্থপরতা, দুর্নীতি এবং অস্থিরতা দেশের উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করছে। তাঁর লক্ষ্য ছিল রাজনীতিকে জনগণের কল্যাণে পরিবর্তিত করা এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে আরো স্বচ্ছ, দায়িত্বশীল এবং কার্যকরী করে তোলা। এটি নেতাদের মাঝে দায়িত্ববোধ এবং জনগণের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছিল। রাজনীতির দুর্বৃত্তায়ন ও রাজনৈতিক হীনমন্যতার বিরুদ্ধে তাঁর অবস্থান ছিল স্পষ্ট, যা একটি সঠিক নেতৃত্বের উদাহরণ হয়ে উঠেছিল। 

এই বক্তব্যটি তখনকার পরিস্থিতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ এটি রাজনীতিতে নৈতিকতার গুরুত্ব এবং নেতৃত্বের দায়বদ্ধতার প্রতি জনগণের মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল। জিয়াউর রহমান রাজনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে দেশের রাজনীতির চরিত্র পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন, যাতে স্বার্থপর রাজনীতিবিদের প্রভাব কমে যায় এবং দেশের উন্নয়নকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিচালিত করা যায়। তাঁর এই বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, তিনি রাজনীতি শুধু ক্ষমতা অর্জনের মাধ্যম হিসেবে দেখতেন না, বরং জনগণের জন্য সেবা এবং উন্নয়নের এক গুরুত্বপূর্ণ উপায় হিসেবে মনে করতেন। এর মাধ্যমে তিনি রাজনৈতিক সংস্কারের এবং জনগণের কল্যাণের জন্য একটি কার্যকরী ও প্রগতিশীল পথ তৈরি করতে চেয়েছিলেন, যা পরবর্তীতে দেশের রাজনীতির মান ও গুণগত পরিবর্তনের জন্য এক বিশাল ভূমিকা পালন করেছিল।

বর্তমানে বিএনপি দলের সাংগঠনিক কাঠামো ও কার্যক্রমের মধ্যে যেসব পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তা শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের “আই উইল মেক পলিটিক্স ডিফিকাল্ট ফর পলিটিশিয়ান” বাণীর প্রতিফলন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাঁর পিতার রাজনৈতিক দর্শন ও আদর্শের বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। “আই উইল মেক পলিটিক্স ডিফিকাল্ট ফর পলিটিশিয়ান” মন্তব্যটি যেখানে জিয়াউর রহমান রাজনীতির দুর্নীতি ও স্বার্থপরতাকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, সেখানে তারেক রহমানও বর্তমানে দেশের রাজনীতিতে পিতার প্রত্যাশাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছেন, যা জিয়াউর রহমানের প্রত্যাশাকে কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে কাজ করছে। 

তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপির মধ্যে দৃঢ় নেতৃত্বের ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে, যেখানে দলের মধ্যে শৃঙ্খলা বজায় রাখার পাশাপাশি রাজনৈতিক কার্যক্রমে নৈতিকতা ও আস্থার প্রতি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। তিনি সবসময় জিয়াউর রহমানের মতো দেশের স্বার্থে রাজনীতি করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন, যাতে দল এবং দেশের মধ্যে কোনো ধরনের স্বার্থপরতা বা দুর্নীতি সৃষ্টি না হয়। জিয়াউর রহমান তাঁর সময়কালে রাজনীতিকে দুর্নীতি ও স্বার্থপরতা থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করেছিলেন এবং এমন একটি রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করতে চেয়েছিলেন যেখানে দায়িত্বশীলতা ও নৈতিকতার মূল্যায়ন হবে। তাঁর এই ভাবনা বর্তমান বিএনপি দলের কার্যক্রমে স্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। এটি জনগণের কাছে রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্বশীলতা এবং সদিচ্ছার বার্তা পৌঁছে দেয়, যা জনগণের আস্থা এবং সমর্থন অর্জনে সহায়ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

এই সমস্ত পরিবর্তন, যার মাধ্যমে দলের মধ্যে শৃঙ্খলা এবং নৈতিকতার প্রতি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। জিয়াউর রহমান চাইতেন, রাজনীতি একটি দায়বদ্ধ, শৃঙ্খলাপূর্ণ এবং জনগণের কল্যাণে নিবেদিত বিষয় হয়ে উঠুক, এবং বর্তমান বিএনপি তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঠিক তেমন একটি পরিবেশ তৈরি করতে সচেষ্ট হচ্ছে। এটি রাজনৈতিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারেক রহমানের কঠোর অবস্থান এবং দলের মধ্যে গণমুখী রাজনীতির চর্চার প্রতিফলন। আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে বর্তমান সাংগঠনিক পরিবর্তন ও রাজনৈতিক ধারণাগুলোর মধ্যে যে যৌক্তিকতা এবং ইতিবাচক প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে, তা দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে যে নৈতিক ও আদর্শিক দায়িত্ববোধ তৈরি হচ্ছে, তা দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। রাজনৈতিক শুদ্ধতা, নৈতিকতা এবং জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতার বিষয়টি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতিকে উন্নত করবে, যেখানে সাধারণ মানুষের আস্থা ও সমর্থন অর্জন করতে হবে। এটি জনগণের অংশগ্রহণকে আরও শক্তিশালী করবে, এবং সমগ্র জাতির উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

সবদিক বিবেচনায় বিএনপির বর্তমান সাংগঠনিক পরিবর্তন এবং রাজনৈতিক ধারণাগুলো বাংলাদেশের ভবিষ্যত নির্মাণে এক ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। রাজনীতি, শৃঙ্খলা, নৈতিকতা ও আধুনিকতার মিশ্রণ দেশের উন্নয়ন এবং গণতন্ত্রের শক্তি বাড়ানোর পথে এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে। তারেক রহমান তাঁর পিতার বাণী অনুসরণ করে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জনগণের জন্য একটি কার্যকরী, স্বচ্ছ ও দায়িত্বশীল নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন, যা জিয়াউর রহমানের প্রত্যাশাকে পুরোপুরিভাবে বাস্তবায়ন করতে সহায়ক হচ্ছে।

লেখক: কলামিস্ট, বিশ্লেষক

চেয়ারম্যান, এসআরআই ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন

Share This Article