ভোক্তার নাভিশ্বাস ওঠা আলুর বাজারে ফিরেছে স্বস্তি। দীর্ঘদিন পর পণ্যটির দাম নেমেছে ২০ টাকায়। অন্যদিকে সরবরাহ বাড়ায় কমতির দিকে রয়েছে পেঁয়াজের দামও।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) কেরানীগঞ্জের আগানগর এবং রাজধানীর নয়াবাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
স্বস্তি ফিরছে ভোক্তার কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলা আলুর বাজারে। তবে গত ডিসেম্বরের শুরুতে অস্থির ছিল এ বাজার। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন খোদ বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেছিলেন, সামনে আর যেন কোনো সমস্যা না হয়, সে বিষয়ে কাজ চলছে।
তবে বাজারে নতুন আলুর সরবরাহ ও আমদানি বৃদ্ধি এবং সরকারের বিভিন্ন সংস্থার বাজার অভিযানে পাল্টাতে শুরু করেছে পরিস্থিতি। বর্তমানে প্রতিকেজি নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকায়। পাইকারি পর্যায়ে যা কেজিপ্রতি ১৮-২০ টাকা ও আড়তে বিক্রি হচ্ছে ১৬ টাকায়।
একসময় চালের দাম বেড়ে গেলে বলা হত ‘বেশি করে আলু খান, ভাতের ওপর চাপ কমান’। বর্তমানে চালের ঊর্ধ্বমুখী বাজারে স্লোগানটি যেন আবারও ভোক্তাকে আলুর দিকে ঝুঁকতে সাহায্য করতে পারে। আলুর দাম কমার তথ্য মিলেছে সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পরিসংখ্যানেও। তথ্য বলছে, এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম ৫৩.৮৫ শতাংশ কমেছে। আর বছর ব্যবধানে যা কমেছে ২৯.৪১ শতাংশ।
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, নতুন আলুর দাম ১২০ টাকা থেকে কমে ২০ টাকায় নেমেছে। আর পুরান আলু বাজারে খুব একটা নেই বললেই চলে। যা রয়েছে সেগুলোও বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা কেজিতে।
এদিকে, একসময় বাজারে ভোক্তার ঘাম ছোটানো পেঁয়াজের বাজারেও নেমেছে স্বস্তি। বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজ ও আমদানি করা পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় দাম কমছে। কেরানীগঞ্জের আগানগর বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা মোসলেম বলেন, মুড়িকাটায় বাজার ভরপুর। পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে বিদেশি পেঁয়াজেরও। এতে দাম কমছে।
বর্তমানে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা কমে খুচরায় প্রতি কেজি পুরান দেশি পেঁয়াজ ৯০-১০০ টাকা, নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ ৫০ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকায়। আর পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি মুড়িকাটা পেঁয়াজ ৪২-৪৪ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০-৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আলু ও পেঁয়াজের দাম কমায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। তারা বলেন, আমদানি বাড়ালে ও নিয়মিত বাজার মনিটরিং করলে দাম কমবে। এতে স্বস্তি পাবে সাধারণ ভোক্তা।