
বঙ্গোপসাগর থেকে ফেরার পথে কক্সবাজারের টেকনাফের নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে দুটি নৌকাসহ আরও ১৪ জেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। ট্রলার মালিকদের অভিযোগ, এই অপহরণের সঙ্গে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সদস্যরা জড়িত।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুরে দুটি ট্রলারসহ ১৪ জেলেকে অপহরণের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ কায়ুকখালী বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদ।
তিনি বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়ার কারণে সাগরে মাছ শিকারে যাওয়া কিছু ট্রলার ঘাটে ফিরছিল। এ সময় আরাকান আর্মির সদস্যরা আমাদের ঘাটের দুটি ট্রলারসহ ১৪ মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে গেছে। এ ধরনের ঘটনায় মাছ ব্যবসায়ীসহ জেলেদের মাঝে ভয়ভীতির সৃষ্টি হয়। তাই এ ধরনের ঘটনায় সরকারের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।’
এর আগে গতকাল শনিবার দুপুরে টেকনাফ ফেরার পথে নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে ১২ জেলেসহ একটি নৌকা ধরে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি। তারা হলেন- মো. আলি আহমদ (৩৯), মোহাম্মদ আমিন (৩৪), ফজল করিম (৫২), কেফায়েত উল্লাহ (৪০), সাইফুল ইসলাম (২৩), সাদ্দাম হোসেন (৪০), মো. রাসেল (২৩), মো. সোয়াইব (২২), আরিফ উল্লাহ (৩৫), মোহাম্মদ মোস্তাক (৩৫) ও নুরুল আমিন (৪৫)। আরেকজনের নাম জানা যায়নি। তারা সবাই টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা।
এসব তথ্য নিশ্চত করে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আরও দুটি ট্রলারসহ ১৪ জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। গতকাল নৌকাসহ ১২ জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।’
ট্রলার মালিক সমিতির পরিচালক মো. সাজেদ বলেন, ‘আরও দুটি ট্রলারসহ ১৪ মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি। এর কারণে ভয়ের মধ্যে আছেন জেলেরা। প্রায় সময় এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।’
বিজিবি বলছে, গত আট মাসে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে নাফ নদ সংলগ্ন এলাকা থেকে অন্তত ২৪০ জেলেকে অপহরণ করে আরাকান আর্মি। এর মধ্যে চলতি বছরের মার্চ থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত অপহৃত হন ১৮০ জন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সহায়তায় এদের মধ্যে প্রায় ২০০ জনকে কয়েক দফায় ফেরত আনা হয়। সর্বশেষ আজ সাগরে মাছ শিকার শেষে ফেরার পথে নৌকাসহ ১৪ জেলেকে ধরে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি। যার ফলে ভয়ে মাছ শিকারে যাওয়া অনেক জেলে ফিরে আসেন।