যে ৫ কারণে দেশের মানুষ বেশি ধারদেনা করেন

বাংলাদেশ চিত্র ডেস্ক

বিশেষ প্রতিবেদকঢাকানিজের প্রয়োজনের পাশাপাশি বিপদ-আপদ সামাল দিতে ধারদেনা করে দেশের অনেক পরিবার। একেক জনের প্রয়োজন একেক ধরনের। কেউ বিপাকে পড়লে সংসারের খরচ চালাতে ঋণ নেন। বাড়ি বানানো কিংবা মেরামত করায় অনেকে ঋণ নিয়ে থাকেন। আবার কেউ সন্তানের শিক্ষার খরচ কিংবা ব্যবসায় বিনিয়োগের জন্য ঋণ নেন। গত সোমবার প্রকাশিত বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) গবেষণায় উঠে এসেছে, কোন কোন উদ্দেশ্যে বেশি ঋণ নেন দেশের মানুষ।

৮ হাজার ৬৭টি পরিবারের মতামতের ওপর ভিত্তি করে গবেষণাটি করা হয়। এসব পরিবারের সবাই অবশ্য ঋণগ্রস্ত নয়। ৫২ শতাংশ পরিবার কোনো না কোনো উদ্দেশ্যে ঋণ নিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি পরিবার ঋণ নিয়েছে সংসার চালানের খরচ মেটাতে।

১. গৃহস্থালির খরচ

সংসারের খরচ মেটাতে সবচেয়ে বেশি ঋণ নেন দেশের সাধারণ মানুষ। দৈনন্দিন খরচ মেটাতে আয় যথেষ্ট না হওয়ায় মানুষ ঋণের ওপর নির্ভর করছেন। আত্মীয়স্বজন–বন্ধুবান্ধবের কাছে ধারদেনা করে সংসার চালান তাঁরা। পিপিআরসির গবেষণায় এসেছে, ঋণ নেওয়া ২৯ শতাংশ পরিবার সংসার খরচ মেটাতে ঋণ নিয়েছে।

২. চিকিৎসার খরচ

বড় ধরনের রোগ হলে খরচ চালাতে ঋণ নেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। অবশ্য দিন আনি, দিন খাই মানুষ রোগবালাই হলেই চিকিৎসার প্রয়োজনে টাকাপয়সা ধার নিতে বাধ্য হন। ঋণ নেওয়ার দ্বিতীয় বড় কারণ হলো চিকিৎসার খরচ মেটানো। পিপিআরসির গবেষণা বলছে, ঋণগ্রহীতা পরিবারগুলোর মধ্যে ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ পরিবার চিকিৎসার খরচ চালাতে ঋণ নেয়।

৩. বাড়ি নির্মাণ বা মেরামত

বাড়ি বা ফ্ল্যাট নির্মাণ বেশ খরচসাপেক্ষ। নিজের জমানো টাকাপয়সায় অনেকের পক্ষে নির্মাণ খরচ চালানো সম্ভব নয়। তাঁদের অনেকে ঋণ নিয়ে নির্মাণ বা মেরামত খরচ চালান। পিপিআরসির গবেষণা অনুসারে, নির্মাণ বা মেরামতের উদ্দেশ্যে ঋণ নেয় ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ পরিবার।

৪. দোকানে বাকি খাওয়া

পাড়ামহল্লার দোকানে বাকি খাওয়া অনেকটা সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ মাসের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত বাকিতে নিত্যপণ্য নেন। নগদ টাকা না থাকায় তারা বাকিতে পণ্য নিতে বাধ্য হন। মাস শেষে বেতন বা মজুরি পেলে সেই বাকির টাকা পরিশোধ করা হয়। অনেকে আবার ঋণ নিয়েও দোকানের বাকির টাকা পরিশোধ করেন। পিপিআরসির গবেষণায় দোকানে বাকি খাওয়ার কারণটি ৪ নম্বরে এসেছে। গবেষণা অনুসারে, ঋণগ্রস্ত পরিবারগুলোর মধ্যে ৯ দশমিক ২৩ শতাংশ পরিবার দোকানে বাকি খায়।

৫. ব্যবসা বা শিল্পে বিনিয়োগ

নিজেদের ছোটখাটো ব্যবসায় বিনিয়োগ করার জন্য অনেকে ঋণ নেন। আবার অনেক ধনী পরিবার শিল্পকারখানা স্থাপনের জন্যও ঋণ নেয়। পিপিআরসির গবেষণা বলছে, ঋণ নেওয়া পরিবারগুলোর মধ্যে ৮ দশমিক ৯৬ পরিবার ব্যবসায় খাটানোর জন্য ঋণ নিয়েছে।

এ ছাড়া বেশ কয়েকটি কারণে ঋণ নেওয়া হয়। সেগুলো হলো—কৃষি খরচ, আগের ঋণ শোধ, শিক্ষা খরচ, বিদেশে যাওয়ার খরচ, অস্থাবর সম্পত্তি কেনা, কৃষি যন্ত্রপাতি ভাড়া, ভাড়া মেটানো, যৌতুক প্রদান, মুঠোফোন কেনা, চাকরির জন্য ঘুষ, বিদ্যুৎ–সংযোগের খরচ, চাঁদা বা জবরদস্তির খরচ মেটানো।



ভালো সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ ফিডটি অনুসরণ করুন


Google News

Share This Article