পুলিশ-‘জুলাই যোদ্ধাদের’ সংঘর্ষ: আটক ২, একাধিক মামলার প্রস্তুতি

বাংলাদেশ চিত্র ডেস্ক

রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউ শুক্রবার দুপুরে ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় একাধিক মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আগে দক্ষিণ প্লাজায় অবস্থান নেওয়া ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ সরিয়ে দিতে গেলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

এ সময় পুলিশের পাঁচটি গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার সেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। সংঘর্ষে পুলিশের পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) তানভীর আহমেদ অন্তত ১০ সদস্য আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার ইবনে মিজান বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশের ওপর হামলা, সরকারি স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনায় একাধিক মামলার প্রস্তুতি চলছে।’

এর আগে শুক্রবার সকাল থেকেই জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, আইনি সুরক্ষা ও পুনর্বাসনের দাবিতে ‘জুলাই যোদ্ধা’ পরিচয়ে কয়েকশ মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হন। দুপুরে তারা সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের মঞ্চে প্রবেশ করে অতিথিদের আসনে বসে পড়েন।

আয়োজক ও সংশ্লিষ্টরা তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। পরে ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ মঞ্চে এসে জুলাই যোদ্ধাদের দাবি নিয়ে আশ্বাস দেন এবং সনদের অঙ্গীকারনামার ৫ নম্বর দফার সংশোধিত ভাষ্য পড়ে শোনান। তবুও একটি অংশ বিক্ষোভ চালিয়ে যায় এবং পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তুলে।

পরে বেলা দেড়টার দিকে বিপুলসংখ্যক পুলিশ, এপিবিএন, র‌্যাব, বিজিবি ও ডিএমপির সোয়াত টিম মোতায়েন করে ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ সরিয়ে দেওয়া চেষ্টা করে। এ সময় দক্ষিণ প্লাজা এলাকায় লাঠিচার্জ ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। অন্যদিনে সড়কে অবস্থানরত বিক্ষোভকারীরা ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে মানিক মিয়া এভিনিউজুড়ে।

সংঘর্ষের সময় বিক্ষোভকারীরা মানিক মিয়া এভিনিউ সড়কে পুলিশের কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে এবং সেচ ভবনের সামনে তাঁবু দিয়ে বানানো পুলিশ ও র‌্যাবের দুটি অস্থায়ী কন্ট্রোলরুমে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এতে রুমের আসবাব, সিসিটিভি ক্যামেরা, ফ্যান, এসি ও অন্যান্য সরঞ্জাম পুড়ে যায়।

এ সময় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে। বিক্ষোভকারীদের দুইভাগে খামারবাড়ির দিকের একটি গ্রুপ এবং আড়ং ও ধানমন্ডির দিকে আরেকটি অংশকে লাঠিপেটা করে সরিয়ে দেওয়া হয়। এতে আহত হয়ে অন্তত ২০ জন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

পরে বিকাল ৩টার দিকে পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ নিয়ন্ত্রণে এনে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়।

Share This Article