৫-২৯ বছর বয়সী শিশু ও তরুণদের মৃত্যুর প্রধান কারণ রোডক্র্যাশ

বাংলাদেশ চিত্র ডেস্ক

সরকার ৫-২৯ বছর বয়সী শিশু ও তরুণদের রক্ষায় কাজ করছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ।

আজ রবিবার (১৬ নভম্বের) বেলা ১১টায় বনানীতে বিআরটিএ’র আয়োজনে ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সহযোগিতায় ‘ওয়ার্ল্ড ডে অব রিমেমব্রেন্স ফর রোড ট্রাফিক ভিক্টিমস’ উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, সকলের সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে বিআরটিএ ৫-২৯ বছর বয়সী শিশু ও তরুণদের রক্ষায় কাজ করছে। এই তরুণদের রক্ষা না করলে ২০৪০ সালের পর দেশ ডেমোগ্রাফি ডিভিডেন্ট হারাবে। এ ছাড়া সেফ সিস্টেম এপ্রোচের আলোকে নিরাপদ যানবহন করতে গাড়ির ফিটনেস অটোমশেনে যাচ্ছে। দক্ষ চালক গড়ে তুলতে ড্রাইভারদের ৬০ ঘণ্টা ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই ট্রেনিং না হলে বিআরটিএ চালকদের লাইসেন্স দেবে না।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দীন আহম চৌধুরী। তিনি বলেন, রোডক্র্যাশ ও এক্সিডেন্ট দুটো পার্থক্য রয়েছে। রোডক্র্যাশ প্রতিরোধযোগ্য কিন্তু এক্সিডেন্ট প্রতিরোধযোগ্য না। তাই সড়কে সকলের নিরাপত্তার কথা ভেবে ‘সড়ক নিরাপত্তা আইন’ প্রয়োজন। কারণ সড়ক পরিবহন আইন পরিবহন সংক্রান্ত আইন। কিন্তু নিরাপত্তা নিশ্চিত করে না।

রোড সেফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ’র পক্ষে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ প্রতি বছরের ন্যায় এবারও রোডক্র্যাশে হতাহতদরে স্বরণে ‘ওয়ার্ল্ড ডে অব রিমেমব্রেন্স ফর রোড ট্রাফিক ভিক্টিমস’ পালন করছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য রিমেম্বর, সাপোর্ট, অ্যাক্ট। র্অথাৎ ‘আমরা স্মরণ করি যারা রোডক্র্যাশে মারা গেছেন তাদের, সহায়তা নিয়ে থাকতে চাই আহতদের পাশে এবং জীবন বাঁচাতে নিতে চাই কার্যকর উদ্যোগ’।

মতবিনিময় সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভী ও গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিবিউটরের কান্ট্রি কোঅর্ডিনেটর ড. মো. শরিফুল আলমসহ আরও অনেকে।

মতবনিমিয়সভায় প্রতিপাদ্য বিষয়ের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় বলা হয়, ৫-২৯ বছর বয়সী শিশু ও তরুণদের মৃত্যুর প্রধান কারণ রোডক্র্যাশ। রোডক্র্যাশে ৯২% মৃত্যু ঘটে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশসমূহে, যা উন্নত দেশের তুলনায় তিন গুণ। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা, পুলিশ এবং বিআরটিএর তথ্য মতে, রোডক্র্যাশ ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিবছর বৃদ্ধি পাচ্ছে।

প্রতিরোধযোগ্য রোডক্র্যাশ প্রতিরোধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সেফ সিস্টেম এপ্রোচ ব্যবহার করে ২০৩০ সালের মধ্যে সড়কে মৃত্যু ও আহতের সংখ্যা কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়ছে। এ বছর রোড সেফটির ওপর ৪র্থ গ্লোবাল মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্সে বাংলাদশে সরকারের প্রতিনিধি মরক্কোতে অংশগ্রহণ করেন। যেখানে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়: বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত সেফ সিস্টেম এপ্রোচের আলোকে বাংলাদেশ ২০২৭ সালের মধ্যে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা আইন চূড়ান্ত ও অনুমোদন করবে; ২, ২০২৬ সালরে মধ্যে -“মোটরসাইকেল হেলমেট স্ট্যার্ন্ডাড বাস্তবায়ন গাইডলাইন” ; -“স্থানীয়র্পযায়ে গতিসীমা নিয়ন্ত্রণে বাস্তবায়ন ও প্রয়োগের সহায়ক ম্যানুয়াল”; এবং একটি সেন্ট্রাল রোডক্র্যাশ ডাটা সিস্টেম স্থাপন করবে। এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে প্রত্যাশা রেখে দিবসটি পালনে তাৎপর্য তুলে ধরা হয়।

সভাতে রোড সেফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশের সদস্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্বকারী ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন, ব্র্যাক, সিআইপিআরবি, স্টেপস, গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিবিউটর, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও বিএনএনআরসি। এ ছাড়া সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়, ডিটিসিএ, পুলিশ সদর দপ্তর, বিআরটিসি, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, সমাজসেবা অধদিপ্তর, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর), বশ্বিস্বাস্থ্য সংস্থা, বাংলাদশে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, বাংলাদেশ সড়ক পরবিহন শ্রমিক ফেডারেশন এবং বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক-সমিতির প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

Share This Article

এ সম্পর্কিত আরও খবর