দেশের ১ কোটি ২০ লাখেরও বেশি লোক জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছে। এই বিপুল সংখ্যক জনগণের দেশে কোন সঞ্চয় স্কীমে টাকা রাখার সুযোগ ছিলো না। কিন্তু গত আগস্ট মাসে সে বাধা তুলে নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আপনি যদি প্রবাসী হয়ে থাকেন তবে বিদেশ থেকে ডলার পাঠিয়ে দেশের বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকে অর্থ জমা রাখতে পারবেন। শুধু তা-ই নয়, চাইলে বন্ডেও বিনিয়োগ করতে পারবেন।
তবে তার আগে আপনাকে জানতে হবে কোন ব্যাংকে সঞ্চয় করবেন আপনি? আর বিনিময়ে সুবিধাটাই বা কি পাবেন?
প্রবাসী গ্রাহকদের কথা মাথায় রেখে একেক ব্যাংক দিচ্ছে একেক রকম সুবিধা। যেমন ধরুন দেশের স্বনামধন্য ব্যাংক ইউসিবি। কোন প্রবাসী বাংলাদেশি যদি এই ব্যাংকে ডিপোজিট খুলতে চান তাহলে তার বয়স হতে হবে ন্যূনতম ১৮। প্রবাসীদের জন্য ইউসিবি এনআরবি ডিপিএস প্লাস স্কীমে ইনস্টলমেন্টের আকার ধরা হয়েছে যথাক্রমে ১শ, ২শ, ৩শ ৪শ ও ৫শ টাকা। তবে এটা ২৫ হাজারের বেশি হতে পারবে না। আর সঞ্চয় স্কীমের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২, ৩, ৫, ৭ এবং ১০ বছর মেয়াদী। প্রতিমাসের ২০ তারিখের মধ্যেই আপনাকে কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে হবে।
মার্কেন্টাইল ব্যাংক প্রবাসীদের জন্য নিয়ে এসেছে মাসিক সঞ্চয় প্রকল্প। যেখানে প্রবাসীরা তাদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক আয় বৈধভাবে নিজ নামে দেশে সঞ্চয়ের সুযোগ পাবেন। ৫শ থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন নির্ধারিত সুবিধাজনক মাসিক কিস্তিতে ১, ৩, ৫, ৮ কিংবা ১০ বছর মেয়াদে সঞ্চয়ের সুবিধা রয়েছে এই ব্যাংকে। ৬ মাস পর পর জমাকৃত টাকার ওপর মুনাফা পাওয়া যাবে। এছাড়া সঞ্চয়কৃত টাকার ৮০% পর্যন্ত ঋণ নেয়ার সুযোগ থাকছে। ব্যাংকের সব শাখা ও এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে এই সঞ্চয় প্রকল্প খোলা যাবে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে প্রবাসীরা ৫ ও ১০ বছর মেয়াদী সঞ্চয় স্কীম খুলতে পারবেন। আর ৫শ, ১ হাজার, ২ হাজার ও ৫ হাজার টাকা করে ইনস্টলমেন্ট দিতে পারবেন।আপনার যদি এই ব্যাংকে এনআরবি সেভিংস একাউন্ট থাকে, তবে মাসিক কিস্তি এই একাউন্ট থেকেই কেটে নেয়া হবে। আপনার সঞ্চয়ের ওপর থেকে ৮০% ঋণ নিতে পারবেন। আর সর্বনিম্ন ২৫ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন।
দেশের সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসে ইসলামী ব্যাংকএর হাত ধরে।চলুন দেখে নেই প্রবাসীদের জন্য তারা কি সুবিধা দিচ্ছে।
এই ব্যাংকটির একটি স্কীম হচ্ছে মুদারাবা এনআরবি সেভিংস বন্ড। সর্বনিম্ন ১৮ থেকে সর্বোচ্চ ৬৫ বছর বয়সী যেকোন প্রবাসী ৫ থেকে ১০ বছর মেয়াদী এই বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারবেন। সর্বনিম্ন ২৫ হাজার থেকে শুরু করে ৫০ হাজার, ১ লাখ, ২ লাখ, ৫ লাখ ও ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করা যাবে। অন্যসব সঞ্চয় প্রকল্প থেকে এই প্রকল্পে আরো বেশি মুনাফা পাওয়া যাবে।
দেশের আরেক শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক যমুনা ব্যাংক প্রবাসীদের জন্য দিচ্ছে নানা সুবিধা । এনআরবি মান্থলি সেভিংস স্কীম, এনআরবি মান্থলি বেনেফিট স্কীম, এনআরবি ডাবল গ্রোথ বেনেফিট স্কীম, এনআরবি ট্রিপল গ্রোথ বেনেফিট স্কীম, এনআরবি কোটিপতি ডিপোজিট স্কীম, এনআরবি মিলিওনিয়ার ডিপোজিট স্কীম, এনআরবি মান্থলি পেনশন ডিপোজিট স্কীমের মতো ১৭টি স্কীম চালু করেছে তারা।
এছাড়া প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক তো আছেই প্রবাসীদের ঋণসহ সবধরনের সুবিধা দেয়ার জন্য। একজন প্রবাসী হিসেবে এখন আপনি-ই সিদ্ধান্ত নিন কোথায় নিরাপদে এবং অধিক মুনাফায় রাখবেন আপনার কষ্টার্জিত অর্থ।
আপনার মতামত লিখুন :