সৌদিতে প্রবাসীর মৃত্যু, এমপির সহযোগীতায় আড়াই মাস পর মরদেহ দেশে এলো

বাংলাদেশ চিত্র ডেস্ক

সৌদি প্রবাসী এনামুল ইসলাম (২৩) গত এক বছর আগে সংসারের অভাবে মেটাতে সৌদিতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে বিদ্যুতিক টেকনিশিয়ান হিসেবে কাজ করতেন টগবগে এই যুবক। স্বপ্ন ছিল হাল ধরবেন সংসারের। তার পাঠানো টাকায় অভাব কাটিয়ে বাবা-মায়ের শেষ সময়টা কাটবে হাসিখুশিতে। তবে শেষ পর্যন্ত লাশ হয়ে বাড়িতে ফিরলেন এনামুল। যেই বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফোঁটাতে গিয়েছিলেন প্রবাসে, সেই বাবা-মায়ের চোখ ভিজছে পানিতে।

নিহত এনামুল ইসলাম দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ৩নং সিংড়া ইউনিয়নের বিরাহীমপুর (খামার) গ্রামের রেজাউল হকের ছেলে। ২ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে সে ছিল ছোট।

মারা যাওয়ার ২ মাস ১৩ দিন পর শুক্রবার রাতে ফ্রিজিং গাড়ীতে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে প্রবাসী এনামুলের লাশ এসেছে গ্রামের বাড়িতে। এরআগে দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিকের সহযোগীতায় শুক্রবার সন্ধায় বিমানযোগে এনামুলের মরদেহ সৌদি থেকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে এসে পৌঁছায়। রাত ১১টায় নিজ গ্রামের কবরস্থানে তার দাফন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ মার্চ সৌদি আরবে কাজ করার সময় বিদ্যুতিক শক খেয়ে মারা যায় এনামুল। তবে নানা জটিলতায় সেখানেই ছিল মরদেহ। অসহায় পরিবার ছেলের লাশ ফেরত পাবার জন্য দিনের পর দিন চোখের পানি ঝরিয়েছেন। ঘুরেছেন বিভিন্ন দফতরের বারান্দায়। তবে তাতেও কাজ হয়নি। শেষ পর্যন্ত পরিবারটির পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক। তার সহযোগীতায় মারা যাওয়ার ২ মাস ১৩ দিন পর দেশে আসলো এনামুলের লাশ।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, অ্যাম্বুলেন্সে কফিনে মোড়ানো সন্তানের লাশ বাড়িতে আসার পর শোকের ছায়া নেমে আসে পরিবারটিতে। কান্নায় ভেঙ্গে পরে পুরো গ্রাম। মারা যাওয়ার দীর্ঘদিন পর গ্রামের ছেলের মরদেহ দেখতে নিহতের বাড়িতে ভিড় জমিয়েছেন গ্রামবাসী। অপরদিকে গ্রামের কবরস্থানে চলছে কবর খনন ও জানাজা নামাজের প্রক্রিয়া।

নিহত এনামুলের প্রতিবেশী শহিদুল ইসলাম বলেন, পরিবারটি খুবই অসহায়। একদিকে সন্তান হারানোর শোক। অপরদিকে মারা যাওয়া সন্তানের লাশ ফেরত না পাবার শোক। পরিবারটি গত দুই মাসের অধিক সময় ধরে লাশ দেশে আনতে নানা চেষ্টা চালিয়েছে। তবে কোন চেষ্টা কাজে লাগেনি। সর্বশেষ আমাদের এমপির সহযোগীতায় আজ (শুক্রবার) এনামুলের লাশ বাড়িতে এলো।

দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক বলেন, প্রবাসী এনামুলের পরিবার আমার সাথে যোগাযোগ করেছিল। আমার এলাকার সন্তানের মরদেহ সৌদিতে পড়ে আছে শুনে আমি সৌদি আরবে থাকা বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করে লাশ দ্রুত দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরুর পদক্ষেপ নেই। নিহত প্রবাসী পরিবারের যেকোন সমস্যায় আমি তাদের পাশে আছি।

Share This Article